টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে জেলার অভ্যান্তরীণ নদ-নদীর পানিও। ফলে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ।
দ্রুতগতিতে পানি বাড়ার কারণে চৌহালীর এনায়েতপুরে তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় ২০টি ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে আরো বহু স্থাপনা।
শনিবার (১১ জুন) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের গেজ রিডার হাসানুর রহমান জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ১৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবিাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের সতর্কতা অনুযায়ী যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, যমুনায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীসহ নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে চৌহালী উপজেলাধীন খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণে ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় যমুনা নদীর
তীব্র স্রোতের কারণে ভাঙন শুরু হয়। এতে মুহূর্তের মধ্যে ব্রাহ্মণগ্রামের ২০টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে বহু বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি। ভাঙনরোধে বালির বস্তা ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
যমুনা নদীর পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ ফুলঝোড়, ইছামতি, করতোয়া, বড়াল ও চলনবিলে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিরম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এসকল এলাকার ফসলি জমির কাঁচা পাট, তিল, বাদাম, আখ ও শাকসবজি বাগানে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসকল ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষক।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীতে পানি তিন-চার দিন বাড়বে। পানি বৃদ্ধি পেলেও শহর রক্ষা পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে বালুর বস্তা ফেলার কাজ চলমান রয়েছে।
চৌহালীতে ভাঙন রক্ষায় অর্থ বরাদ্দ পেলে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।