#

ভাল খেলতে না পারলে সমালোচনা হতেই পারে। তাই বলে কারো সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে কাল দাগ দেয়া এবং তার বড় অর্জন, কৃতিত্বকে খাট করা এবং সুনাম-সুখ্যাতি বিনষ্ট করার অধিকার কারও নেই। আর সেই ক্রিকেটার যদি হন মাশরাফি বিন মর্তুজা আর তামিম ইকবাল- তাহলে কি বলবেন?

কঠিন সত্য হলো, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ হারাতেই মাশরাফির বোলিং আর তামিমের ব্যাটিং নিয়ে কথা হচ্ছে। কেউ কেউ তাদর অতীতের সব সাফল্য, কৃতিত্ব ও অর্জন ভুলে গিয়ে চরম সমালোচনায় মেতেছেন। আজ (শনিবার) সংবাদ সম্মেলনে তা নিয়ে কথা বললেন তামিম ইকবাল।

তবে অত্যন্ত সৌজন্যতাবোধের পরিচয় দিলেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া পরিবারের একটা প্রজন্মের এ কনিষ্ঠ সন্তান। প্রশ্ন ছিল, আপনার এবং মাশরাফির সমালোচনায় মেতেছেন কেউ কেউ। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কী? জবাবে তামিম শুরুতেই বলে দিলেন, ‘আমার কথা বাদ দিন। মাশরাফি ভাইয়ের কথা বলি।’

মাশরাফি সম্পর্কে বলতে গিয়ে অনেক কথার ভিড়ে তামিম পরিষ্কার উল্লেখ করেছেন, ‘আমরা এমন একজন সম্পর্কে সমালোচনা করছি, যার হাত ধরেই আমরা এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়েছে। তামিম আরও একটি কথা জোর দিয়ে বলেছেন, তা হলো, ‘মাশরাফি ভাই আরও অনেক বেশি শ্রদ্ধা ও সম্মানের দাবিদার।’

সমালোচকদের বোধ-উপলব্ধির সমালোচনা করে তামিম বলে ওঠেন, ‘কথাটা বলে কারা সেটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।’ যারা বলছে, তাদের উদ্দেশ্যে তামিমের কথা, ‘দয়া করে, ভেবে চিন্তে কথা বলুন। আপনারা এমন একজনকে নিয়ে কথা বলছেন, যিনি ১৫-১৬ বছরের বেশি সময় ধরে বায়লাদেশের ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছেন।’

তামিম বলতে থাকেন, ‘আমি কোনো এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম, যারা এ কথাগুলো বলছে এবং যারা এ কথাগুলো লিখছে তারা যদি কথাটা বলার আগে কিংবা লিখার আগে দু’টা মিনিট যদি একটু চিন্তা করি আমরা কাকে নিয়ে কথা বলছি, সে কি করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ১৫-১৬ বছর ধরে?’

‘এখন বলা হচ্ছে, সে আনফিট? যদি আনফিট বলতে হয় তাহলে সে ১০-১৫ বছর ধরেই আনফিট । উনার দুই হাঁটু তো কোনো সময়ই ভালো ছিল না। দশ বছর ধরে তো আমরা এটাকে ইমোশনালি দেখেছি। এখন জাস্ট ১৯-২০ হচ্ছে বলে আমরা এটাকে অনেক বড় করে দেখছি। এমন একটা ব্যক্তিকে নিয়ে আমরা কথা বলছি যে ওই ব্যক্তির হাত ধরে কিন্তু আমরা আজ এখানে আসছি। দল হিসেবে, ব্যক্তি হিসেবে আমি আমার কথাও বলবো। এটা খুবই দূর্ভাগ্যজনক। কারণ তিনি যা করেছেন বাংলাদেশ দলের জন্য, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এখানে আনার জন্য- এভাবে করে কমেন্ট করা এবং ওরকম আলোচনা করা খুবই আনফেয়ার। তিনি এখন যা পাচ্ছেন তারচেয়েও বেশি সম্মান প্রাপ্য।’

‘আমি মাথায় নিতে চাই না যে অন্যরা কী বলছে। বিদেশি কিছু সাবেক ক্রিকেটাররা বলেছেন শুনেছি। উনারা নিজেদের জীবনে কি করেছে সেটা আমার প্রশ্ন। নিজেদের জীবনে এমন কি করেছেন যে একটা রানিং খেলোয়াড় সম্পর্কে এভাবে বলছে। আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ না যে দেশের বাইরের মানুষ আসলে কি বলছে না বলছে। সবার মত থাকতে পারে, সবাই সেটা দেওয়ার অধিকার রাখে। দেশের মানুষজনের এটা বোঝা উচিত আমি যখন মাশরাফির বিষয়ে একটা কথা বলছি তখন যেন শুধু চিন্তা করে সে আমাদের দেশকে কি দিয়েছে।’

‘খেলোয়াড়দের জীবন সার্কেলের মতো। ভালো খেলবে, খারাপ খেলবে আবার ভালো খেলবে। ভালো খেললেই যে আপনারা সাথে থাকবেন তেমনটা নয়। যখন কেউ খারাপ খেলবে তখনও তার সাথে থাকতে হবে। এরকম মেগা ইভেন্টে প্রত্যেকটা খেলোয়াড় ভালো খেলে না। কিছু খেলোয়াড় খেলে। ইভেন যারা চ্যাম্পিয়ন হতে তাদেরও কিন্তু সব খেলোয়াড় ভালো খেলবে না। কয়েকজন খেলবে। কিছু খেলোয়াড় ফর্মে থাকবে, কিছু থাকবে না। আমি খুব বেশি কিছু জানিনা যে কে, কি বলছে। তবে যতটুকু জানি সেটাও বেশি। আমার প্রত্যাশা এগুলো নিয়ে আর বেশি কথা না হউক। উনি ক্রিকেট দলের জন্য যা করেছে সেটা মনে রাখা উচিত সমালোচনার আগে।’

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন