দেশটির বিশ্বকাপ ইতিহাসটা দারুণ সমৃদ্ধ। ১৯৩০ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল বেলজিয়াম। একে একে অনেকগুলো আসরে অংশ নিলেও প্রাপ্তির ঝুলিটা কিন্তু ফাঁকা। এখন পর্যন্ত কেবল একবারই সেমিফাইনালে উঠতে পেরেছে দলটি। সেটিও ১৯৮৬ সালে। ১৩টি আসরে অংশ নিয়ে ওই একটি সেমিফাইনাল ছাড়া বলার মতো আর কোনো সফলতা নেই দেশটি। গত বিশ্বকাপে দোর্দন্ড প্রতাপ শুরু করলেও কোয়ার্টার ফাইনালে থেমে যায় তাদের দৌড়। এবার কিন্তু থামার নাম নিচ্ছে না বেলজিয়াম। এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচ হার বা ড্র ছাড়াই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে দলটি।
এখন পর্যন্ত হারের স্বাদ না পাওয়া বেলজিয়ামের বিদায় ঘন্টা বেজে যেতে পারে এবার। সেমিফাইনালে উঠতে হলে নেইমার-কুতিনহোর ব্রাজিলের মুখোমুখি হতে হবে লুকাকু-কম্পানির বেলজিয়ামকে। বলাই বাহুল্য, সেরা চারে যেতে হলে ইতিহাসের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে তাদের।
স্বপ্নের মতো খেলতে থাকা বেলজিয়াম তাদের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে পানামাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। এরপর তিউনিসিয়ার বিপক্ষে জেতে ৫-২ ব্যবধানে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফেভারিট ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় পর্বে জায়গা করে নেয় দলটি। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে জাপানের বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নেয় এডেন হেজার্ড-রোমেল লুকাকুর দল। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ৩-২ গোলে ম্যাচটা জেতে ‘ডার্ক হস’ খ্যাত দলটি।
কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামকে খেলতে হবে আসরে সবচেয়ে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। ব্রাজিল বলেই বেলজিয়ামকে আগ বাড়িয়ে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এগিয়ে রাখা যাচ্ছে না। ভিনসেন্ট কোম্পানি, থোমাস মুনিয়ের, থোমাস ভারমালিনদের সামলাতে হবে নেইমার-কুতিনহো-উইলিয়ানদের। অন্যদিকে গোল করতে হলে থিয়াগো সিলভা, মার্সেলো, মিরান্ডাদের ফাঁকি দিতে হবে হ্যাজার্ড-লুকাকুদের।
কাজটা ব্রাজিলের জন্যও সহজ হবে না। বিশেষ করে গত চারটি ম্যাচে বেলজিয়াম যেভাবে খেলেছে তাতে করে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে ব্রাজিলকেও। ফুটবলীয় সমীকরণ বিচার করলে, কোয়ার্টার ফাইনালেই বিদায় নিতে হতে পারে পাঁচবারের বিশ্বজয়ী দলটিকে। বিশেষ করে জাপানের বিপক্ষে বেলজিয়াম যেভাবে অদম্য গতিতে খেলেছে তাতে তো দলটির হাতেই বিশ্বকাপ দেখছেন অনেকে।
তবে মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে এগিয়ে আছে ব্রাজিলই। এ পর্যন্ত চার সাক্ষাতে তিনবারই জিতেছে সেলেসাওরা। একমাত্র যে হারটি হয়েছে সেটিও অর্ধযুগ আগে, ১৯৬৩ সালে। সেবার ৫-১ গোলে জিতেছিল বেলজিয়াম।
সব সমীকরণ মিলবে ৬ জুলাই, কাজান অ্যারেনায়। সেদিন বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় দেখা হবে ব্রাজিল-বেলজিয়ামের। বিশ্বকাপের সবচেয়ে আরাধ্য ম্যাচটি দেখার জন্য চোখ রাখুন টেলিভিশনের পর্দায়।