গত এক দশকে কারাগারে বন্দি অবস্থায় ৬০৭ শিশুকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বাহরাইন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। ফাঁস হওয়া বিচারিক প্রতিবেদন এবং নির্যাতনের শিকার শিশুদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রতিবেদনটি করেছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় শিশুদের শারীরিক নির্যাতন করতো কর্তৃপক্ষ। বাবা-মা এবং আইনজীবীদের অনুপস্থিতিতেই বেশিরভাগ সময় ওই শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো। দেশটির পাবলিক প্রসিকিউশন অফিস নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, বাহরাইনের কারাগারে এখনো কমপক্ষে ১৫০ শিশু বন্দি রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, অপরাধ প্রমাণ করার জন্য শিশুদের অনেক বক্তব্যকেই (তদন্ত সংস্থার তরফ থেকে) পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি জোর করে স্বীকারোক্তি নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনও করতো।
কারাগারের দুঃসহ বন্দি জীবনের কথা জানিয়ে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর বলে, যাদের জেলে আনা হতো তাদের শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখা হতো। বন্দিদের পোশাক পরিবর্তনেরও কোনো সুযোগ দেওয়া হতো না।
জানা গেছে, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ১৯৩ শিশুকে কারাদণ্ড দেওয়া হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে। পাশাপাশি অনেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।
যোগাযোগ করলে বাহরাইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল জাজিরার কাছে দাবি করে, বাইরাইনে কোনো শিশু কারাবন্দি নেই। তবে ১৫-১৮ বছর বয়সী কিছু শিশু আছে সংশোধন কেন্দ্রে।
মন্ত্রণালয়টি এক বিবৃতিতে জানায়, সাজা ভোগকারী শিশুরা ফৌজদারি এবং সন্ত্রাসী মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এবং তারা ন্যায়বিচার পেয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এএফডি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক আব্দুল মাজিদ মারারি এ বিষয়ে বলেছেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য খুবই শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা যেতে পারে।