বাজার দখলে উৎপাদনের চেয়েও কম দামে ভারতে ওষুধ রফতানি চীনের

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

উৎপাদন ব্যয়ের চেয়েও কম দামে প্রধান একটি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সিপ্রোফ্লক্স্যাসিন হাইড্রোক্লোরাইড ভারতের বাজারে ছাড়ছে চীন। ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প ধ্বংসে এবং বাজার দখলে চীন পরিকল্পিত উপায়ে এই কাজ করছে বলে দেশটির সরকার পর্যাপ্ত প্রমাণ পেয়েছে। ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের দু’জন কর্মকর্তা দেশটির ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এই ওষুধটি সাধারণত ত্বক, হাড়, শ্বাসযন্ত্র ও মূত্রনালিতে ব্যাক্টেরিয়াজনিত সংক্রমণ সারাতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কয়েক ধরনের ডায়রিয়ার চিকিৎসায় এই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পর ভারতের সরকার জানতে পায়, সম্প্রতি চীন থেকে সিপ্রোফ্লক্স্যাসিন হাইড্রোক্লোরাইড আমদানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতীয় ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, এই আমদানির গতি এত পরিমাণে বেড়েছে যে- দেশীয় কোম্পানিগুলোর ওষুধটির দাম পড়ে গেছে।

ভারতে সিপ্রোফ্লক্স্যাসিন হাইড্রোক্লোরাইড তৈরি হওয়া সত্ত্বেও দেশটির বাজার ৯৮ শতাংশ দখল করে রেখেছে চীন থেকে আমদানিকৃত এই ওষুধ। ভারতের একটি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, চীন কম দামে ওষুধটি বাজারে ছাড়ায় দেশীয় কোম্পানিগুলোকে প্রতি কেজিতে ৩ দশমিক ৩ ডলার লোকসান গুণতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ওষুধটির দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পরও স্থানীয় শিল্পের প্রকৃত উৎপাদন ও বিক্রি হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু ভারতে চীনা সিপ্রোফ্লক্স্যাসিন হাইড্রোক্লোরাইডের বাজার বেড়েছে। এ কারণে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে।

গত ১৫ জুন ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ট্রেড রিমেডিজ (ডিজিটিআর) জানায়, এই কারণে দেশীয় শিল্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর ভারতে অতিরিক্ত চীনা পণ্যের রফতানি ঠেকাতে বিশেষ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত আগামী জুলাই মাসে শুনে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিজিটিআর।

অবৈধ উপায়ে চীনের এই পণ্য রফতানি ঠেকাতে ডিজিটিআরের শুল্ক আরোপের বিষয়টি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষ। গত জানুয়ারি মাসে দেশীয় ওষুধপ্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর অভিযোগ পেয়ে চীন থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে সিপ্রোফ্লক্স্যাসিন হাইড্রোক্লোরাইড আমদানির বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে ডিজিটিআর।

উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে অন্যদেশে পণ্য রফতানি অবৈধ এবং এ জন্য আর্থিক জরিমানা করা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তির শর্তে উল্লেখ আছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের অপর এক কর্মকর্তা।

চীন আরও বেশ কিছু পণ্য উৎপাদনের ব্যয়ের চেয়ে কম দামে ভারতে রফতানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, দেশীয় কোম্পানিগুলোর অভিযোগ পাওয়ার সেগুলোও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।