বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

অনলাইন ডেস্ক :: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগ দাবিতে পঞ্চম দিনের মত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে ক্যাম্পাসে এবং বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের নিচে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক তরিকুল ইসলাম, লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক রিফাত মাহামুদ, আইন বিভাগের শিক্ষাক সুপ্রভাত হালদারসহ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন।তারা আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সাফ জানিয়ে দেন উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।

এদিকে আবাসিক হল বন্ধের পর এবার শিক্ষার্থীদের ডাইনিং বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন উস্কে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বৈকালীন চা চক্র ও আলোচনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না জানানোয় অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপর একটি অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড করার চেষ্টাকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেন উপাচার্য। উপাচার্যের ওই মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে পরদিন ২৭ মার্চ সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ওইদিন আরও কিছু দাবি যুক্ত করে ১০ দফা দাবি আদায়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনের শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছাত্র আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে ২৭ মার্চ রাত ৩টার দিকে উপাচার্য তার একক ক্ষমতা বলে ২৮ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ এবং বিকেল ৫টার মধ্যে সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেন।

 

২৭ মার্চ রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশের ঘটনায় আরও ক্ষুব্ধ হন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ উপেক্ষা করে ২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) আবাসিক শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ না করে নিজ নিজ হলে অবস্থান নেন এবং উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে তৃতীয় দিনের মাথায় উপাচার্য তার বক্তব্যের জন্য প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে এতে সন্তুষ্ট নয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ওইদিন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। চতুর্থ দিনে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তারা। এরপর ওই রাতে হলের ডাইনিং চালু থাকলেও সকাল থেকে সকল আবাসিক হলের ডাইনিং বন্ধ করে দেয়া হয়।

ঢাকায় অবস্থানরত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক মুঠোফোনে বলেন, দুঃখ প্রকাশের পরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অযৌক্তিক। এই আন্দোলন এখন আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে একটি মহল এই আন্দোলনে ইন্ধন যোগাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক একেএম মাহবুব হাসান ষড়যন্ত্র করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি পরবর্তী উপাচার্য হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন। বিষয়টি আমি শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করেছি।