মোঃ রনি হাওলাদার, ববি প্রতিনিধিঃ বর্ণাঢ্য আয়োজনে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ তথা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ম বর্ষপূর্তি ও ১০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে নানা ধরণের কর্মসূচি। গতকাল ২২শে ফেব্রুয়ারী (শনিবার) সকাল ১০ ঘটিকার পরে মুহূর্তের মধ্যেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ নিজস্ব ব্যানার, ফেস্টুনে তুলে ধরেন তাদের নিজেদের আধিপত্য। বেলা ১১ ঘটিকায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২০ উদ্বোধন ঘোষণা করেন উপাচার্য ড. ছাদেকুল আরেফিন এবং প্রধন অতিথি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম।
সকাল সাড়ে ১১ ঘটিকায় উপাচার্যের নেতৃত্বে বের হয় আনন্দ র্যালি যেখানে অংশগ্রহণ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রায় পাঁচ হাজর শিক্ষার্থী, শিক্ষক,অতিথিবৃন্দ , কর্মকর্তা ও কর্মচারী। র্যালি শেষে শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ ও মিষ্টমুখ করানো।
বেলা ১২ ঘটিকায় শুরু হয় নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিষদ ও অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। বক্তব্যে ১০ বছরে পদার্পণ করার পরেও কিছু সীমাবদ্ধতার কথা প্রধান অতিথির কাছে তুলে ধরেন তারা যার মধ্যে প্রাধান্য পায় প্রোমোশন ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি।
এরপর বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য ও ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম। তিনি বলেন, ” বঙ্গবন্ধু আদর্শকে বুকে ধারণ করলে কেউ দূর্নীতি, অন্যায় করতে পারেনা। বঙ্গবন্ধুর সময় ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ছাত্রসমাজ ও শিক্ষকরা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু বর্তমানে সমসাময়িক বিষয়ে দেখলে খুবই হতাশ হই। ক্রমেই শিক্ষক ছাত্র বিভক্ত হয়ে যাছে। শিক্ষক ছাত্র বিভক্ত হওয়া বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নয়। আমার নিজ কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বুয়েট) এক শিক্ষার্থীকে ঘন্টার পর ঘন্টা নির্যাতন করা হয়েছে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কার করায় উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করে রেখেছে। আশা করছি আপনারা যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করেন তাহলে কোনো বিভেদ হবে না, দূর্নীতি হবে না এবং আমরাও শিক্ষার মানকে উন্নীত করা মাধ্যমে শিক্ষক, ছাত্র সমন্বয়ে একটি ভালো পরিবেশ দিতে পারবো।
অন্যদিক সভাপতির বক্তব্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ” আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। একসময় এদেশে তুলা উৎপাদন করা হতো যেটা পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে সুতা উৎপাদন করে বিদেশে বিক্রি করে সে টাকা পশ্চিম পাকিস্তানে রেখে দেয়া হতো। বঙ্গবন্ধু এটা দরুনভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন বলেই ৬ দফা দাবি দিয়েছিলেন। তোমরা যারা শিক্ষার্থী তাদের ৩টি যায়গায় দায়বদ্ধতা রয়েছে এক তোমার পরিবারের কাছে, দুই এদেশের মানুষের কাছ এবং তিন যারা এ বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন তাদের কাছে। তোমাকে দিয়ে যদি তাদের উপকার না হয় তাহলে তোমাকে সার্টিফিকেট দিয়ে আমাদের লাভ নেই। প্রতিনিয়ত সততার চর্চা করতে হবে এবং এটা করতে পারলে তুমি আদর্শ নাগরিক হয়ে উঠবে। “
এরপর বিকাল ৪ ঘটিকায় শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে শিক্ষার্থীরা নাচে গানে বিশ্ববিদ্যালয় উদযাপন করেন।