টানা ভারী বৃষ্টিতে দুদিন আগে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কিন্তু বৃষ্টি কমলেও পানি নিষ্কাশনের অভাবে কিছু এলাকা থেকে এখনো নামেনি পানি। হাঁটু সমান পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে জলাবদ্ধতার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। বিশেষ করে বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্রে বটতলা থেকে চৌমাথা, বগুড়া রোডের একাংশ, রাজাবাহাদুর সড়কসহ অলিগলিতে তিনদিন ধরেই পানি জমে আছে।
নগরীর চৌমাথা সিএন্ডবি রোড সংলগ্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিপিপি), শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বৃষ্টির পানি জমে আছে। তবে নগরীর বেশিরভাগ বাসাবাড়ির ভেতরে পানি জমলেও তা নেমে গেছে।
নগরীর বটতলা এলাকার বাসিন্দা সুজন মাহমুদ বলেন, আমাদের এলাকার প্রত্যেকটি ঘরে পানি উঠে গেছে। পানি নেমে গেলেও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে আছে। এতে হাঁটাচলা করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে পানি আটকে এ দুর্ভোগের তৈরি হয়েছে।
বগুড়া রোড এলাকার বাসিন্দা ইমরান সিকদার বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই এ এলাকার সড়ক তলিয়ে যায়। তার মধ্যে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে হাঁটুসমান পানি জমেছে। এখন পানি কিছুটা নেমে গেছে। বাসা বাড়ির পানি নামলেও রাস্তায় এখনো পানি থাকায় চলাফেরায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের উপ-সহকারী মো. মাসুম বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময়ের জলাবদ্ধতা আবারো দেখলো বরিশাল নগরবাসী। অথচ সিত্রাংয়ের সময় কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। একই সময় বৃষ্টি হয়েছিল ২৪১ মিলিমিটার। অথচ সোমবার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং বৃষ্টি হয় ১৭৭ মিলিমিটার। এরপরও জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই মেলেনি নগরবাসীর।
তিনি আরও বলেন, নদ-নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় এর ধারণক্ষমতাও স্বাভাবিকভাবে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে শহর এলাকার মধ্যে যেসব ছোট নদী বা খাল আছে সেগুলো বিভিন্ন জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত খনন কাজ শুরু করা যায়নি। এখনই এ বিষয়ে সমন্বিত কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাবে।