বরিশাল জেলায় দিন দিন কমে আসতে শুরু করেছে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। চলতি মাসের শুরুর দিকে বরিশাল জেলায় যে হারে সংক্রমন শুরু হয়েছিলো তাতে অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলো জেলার বাসিন্দারা সহ চিকিৎসকরাও।
শেষ এক সপ্তাহে দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে । সপ্তাহের ব্যবধানে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসে ৫৯ জনে। ২০ জুন শনিবার থেকে ২৫ জুন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা সংক্রমিত হয় ২০৩ জন। অপর দিকে ১৩ জুন শনিবার থেকে ১৯ জুন শুক্রবার পর্যন্ত করোনা রোগী সনাক্ত হয় ২৬২ জন। এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন বলেন আসলে অল্প দিনের পরিসংখ্যানে কম বেশী মূল্যায়ন করা সমীচিন নয়। তারপরও দুই সপ্তাহের একটি পরিসংখ্যান আমলে নেয়ার মত।
এটা অবশ্যই ইতিবাচক ও আশার সঞ্চার করে। আশা করি এ ধারা অব্যাহত থাকবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন অনেকে মনে করতে পারেন নমুনা কম পরীক্ষা হচ্ছে বলে আক্রান্তের সংখ্যা কম হচ্ছে। এ ধরনের ধারনা মোটেও সঠিক নয়। উপরন্ত আগের চেয়ে এখন অনেক বেশী নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ১৩৩৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে।
যাদের মধ্য থেকে ২৫৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। আর জেলায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। তবে বিপরীত চিত্র বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায়। ২০ জুন শনিবার থেকে ২৫ জুন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ২০৩ জন আক্রান্ত হলেও এর মধ্যে ১৪২ জন নগরীর ৩০ টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে হিসাবে এক সপ্তাহের মোট আক্রান্তের প্রায় ৭০ ভাগই সিটি এলাকার বাসিন্দা।
বাকি ৩০ ভাগ জেলার ১০ টি উপজেলার। এছাড়া ১৩ জুন শনিবার থেকে ১৯ জুন শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় ২৬২ জন আক্রান্ত হলেও এর মধ্যে ২১৭ জনই নগরীর বাসিন্দা। যা গত সপ্তাহে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৮২ ভাগ রয়েছেন সিটি এলাকার। নগরীতে আক্রান্তের এমন তীব্রতার পরও রেড জোন ঘোষিত ২৭ টি ওয়ার্ড লকডাউন করতে সক্ষম হয়নি দায়িত্বরতরা। দুদিন আগে মাইকিং করে পরীক্ষা মূলক ভাবে নগরীর ২ টি ওয়ার্ড লক ডাউনের ঘোষনা দিলেও রাতেই আবার তা স্থগীত ঘোষনা করে বিসিসি কর্তৃপক্ষ।
কারন হিসাবে তারা বলেন জন প্রশাসন মন্ত্রনালয় রেড জোন ঘোষিত এলাকায় সাধারন ছুটি ঘোষনা করেনি। তাই তার আগে লকডাউন করার কোন সুযোগ নেই বলেই ক্ষ্যান্ত রয়েছে তারা। লকডাউন ব্যাপারে সিটি এলাকায় সম্পূর্ন দায়িত্ব বর্তায় করপোরেশনের উপর। প্রশাসন তাদের সহযোগীতা করবে মাত্র। এক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের অনুমতি ছাড়া সিটি কর্পোরেশনের কিছুই করার নেই।
সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মতিউর রহমান বলেন আমাদের যারা নমুনা সংগ্রহ করতো তারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু তারা এখন করোনা মুক্ত হলেও ভয়ে আর কাজ করতে চাচ্ছে না। যেহেতু তারা চুক্তি ভিত্তিক ছিলো তাই তাদের উপর জোড় খাটানোও যায় না। তাই বিকল্প চিন্তা করছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি নমুনা সংগ্রহ কাজ শুরু করতে পারব। এছাড়া বর্তমানে কিটের সংকট রয়েছে বলেও জানান তিনি।