 
                                            
                                                                                            
                                        
বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে আসবাবপত্র কেনাকাটাসহ বিভিন্ন খাতের বরাদ্দের টাকা হরিলুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ফাইলটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান ওই দপ্তরের উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফারুক হোসেন।
এদিকে, দপ্তরের একাধিক সূত্র জানিয়েছেনমোটা অঙ্কের টাকা বরাদ্দ হলেও একমাত্র তিনটি টেবিল ও ৬টি চেয়ার ছাড়া কিছুই কেনা হয়নি। জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলায় জমি জরিপ কাজ ১৯৮৯ সালে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ হয়।
জমি জরিপ কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে ওই দপ্তরে ২/১ জন কর্মকর্তা যোগদানে করে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ডেপুটেশনে কাজ করে আসছে।
অফিসিয়াল কাজে ও বেতন নিতে তারা গৌরনদীতে এসে থাকেন। এ কারণে অফিসে কোন কাজকর্ম না থাকায় সেবা গ্রহীতাদের কোন উপস্থিতি নেই। অনির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ২০২১ সালে গৌরনদী সেটেলমেন্ট অফিসে আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য প্রায় ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে।
এ ছাড়া দপ্তরে তিনমাস পরপর বরাদ্দ, কাগজপত্র ক্রয়, কম্পিউটার মেরামত ও আপ্যায়ন বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে জানতে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে ওই দপ্তরের উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফারুক হোসেন প্রথমেই প্রতিবেদককে মামলা করার হুমকি দেয়।
পরবর্তীতে সাংবাদিকরা ওই দপ্তরে আসবাবপত্র ক্রয়ের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তখন কোন তথ্য না দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরণ করেন।
বিষয়টি নিয়ে ইউএনও বিপিন চন্দ্র বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে ইউএনও এ ব্যাপারে তার (ফারুক) কাছে কাছে জানতে চান। তিনি (ফারুক) ইউএনওকে জানান, সংশ্লিষ্ট ফাইলসহ বরাদ্দের ব্যয়ের কোন ফাইল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তখন ইউএনও তাকে (ফারুক) বরিশাল অফিস থেকে বরাদ্দের ফাইলের অনুলিপি এনে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেন। ওই দপ্তরের নাইট গার্ড সুলতান হোসেন জানান, গত মার্চ দপ্তরের জন্য ৩টি টেবিল ও ৬টি চেয়ার কেনা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোন কিছু কেনা কিছু কেনা হয়নি।
উপ- সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফারুক হোসেন ডেপুটেশনে ভোলার বোরহানউদ্দিন থানায় কর্মরত আছেন। অফিসিয়াল কাজে মাঝে মধ্যে তিনি (ফারুক) গৌরনদীতে আসেন। অফিসের আলমারী তালা দিয়ে চাবি কর্মকর্তারা নিয়ে যান।
এছাড়া এ দপ্তরের ৫/৬ কর্মচারী বিভিন্ন উপজেলায় ডেপুটেশনে কর্মরত রয়েছে। অফিসের মালামালের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমি সঠিক ভাবে পালন করে যাচ্ছি।
উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার সুগতি চাকমা বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আমি গৌরনদী অফিসে যোগদান করেছি।
আমি যোগদানের পর কম্পিউটার মেরামত, কাগজপত্র ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ পেয়েছি। বরাদ্দের টাকা সঠিক ভাবে ব্যয় করা হয়েছে। তিন মাস পর পর অফিসের জন্য টাকা বরাদ্দ আসে বলে তিনি (সুগতি) জানান।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফারুক হোসেন তাকে (ইউএনও) জানান অফিসে গত বছরের কোন ফাইল খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ কারণে উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাকে জেলা অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট ফাইলের অনুলিপি বা ফটোকপি এনে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।