বরিশালের বাকেরগঞ্জের নেয়ামতি ইউনিয়নের মহেষপুর বাজারে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ সুলতান আহমেদ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
সুলতান বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মহেষপুর এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন।
আটককৃতরা হচ্ছেন- নেয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আব্দুস সালাম মৃধা, শেখ জসিম, ফয়সাল হাওলাদার, জহিরুল ইসলাম, সোহেল খান, ইব্রাহীম, কামরুল ইসলাম ও বশির হাওলাদার।
বাজারের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত সোমবার রাত ৮টার সময় সুলতান হোসেন ও নেয়ামতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিমল সাহা মহেষপুর বাজারের চায়ের দোকানে বসে কথা বলার পাশাপাশি চা পান করছিল। এ সময় আকস্মিক একদল দুর্বৃত্ত তাদের উপর হামলা চালায়। হামলা চলাকালে দুর্বৃত্তরা ওই দু’জনকে পিটানোর পাশাপাশি সুলতানকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে সুলতান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত নেয়ামতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বিমল সাহা অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতা ছালাম সিকদারসহ (মুখোশ ছাড়া) মুখোশধারী ১০/১২জন দুর্বত্ত অতর্কিত সেখানে গিয়ে তাদের পেটাতে থাকে। পিটুনিতে তিনি (বিমল চন্দ্র) পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা সুলতানকে গুলি করে। সুলতান রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
মহেষপুর বাজারের ৬০ বছর বয়সী দোকানী শাহে আলম মৃধা জানান, দুর্বৃত্তদের মধ্যে চারজনের মুখমন্ডল গামছা দিয়ে বাধা ছিল। একজনের মুখ খোলা ছিল। তবে তাকে এ এলাকায় কখনো দেখেননি। অপর দুই দোকানি ইসাহাক আকন ও রঙ্গলাল সাহা জানান, তারা গুলির শব্দ পেয়েছে। কিন্তু দোকান থেকে বের হয়ে কাউকে দেখেননি।
মেডিকেলের চিকিৎসক শাহে আলম জানিয়েছেন, সুলতানের পেটের মাঝামাঝি স্থান থেকে গুলি বের করা হয়েছে। তার শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে। এ ঘটনার পর আজ মহেষপুর বাজার পরিদর্শনে যান এসপি সাইফুল ইসলাম। তিনি স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, ঘটনার পরপরই বাকেরগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে আটজনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। বাকীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তারাও এ মামলায় আসামি হবে।
এদিকে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আবুল হোসেন খান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের দ্বন্দ্বের কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে অহেতুক বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। আসল আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার না করে বিএনিপ নেতা-কর্মীদের বাড়িবাড়ি অভিযান চালানোর কারণে সেখানকার বিএনপি নেতাকর্মীরা এলাকাছাড়া। তিনি সত্যিকার ঘটনা উদঘাটন করে ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার নেয়ার দাবি জানান।