বরিশালে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হলো সাবেক মেয়র কামালের বানানো গ্রীন সিটি পার্ক

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বরিশালের নগরের শিশুদের উন্মুক্ত বিনোদন এবং মানসিক শক্তি বাড়ানোর তাগিদ নিয়ে নির্মাণ করা গ্রীণ সিটি পার্কটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। পার্কটি তার সক্ষমতা হারিয়েছে এবং নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে খেলনা প্রস্তুতের জন্য তা ধ্বংস হয়ে গেছে বিধায়-শিশুদের নিরাপত্তার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে মর্মে জানিয়েছে নগর ভবন। পুর্নঃসংস্কার করে আবার চালু হবে বলেও জানান নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম। তিনি জানান, পার্কটি ব্যবহারে সম্পূর্ণ অনুপোযোগী। শিশুরা বিভিন্ন খেলনা ব্যবহার করলে তারা দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। সিটি মেয়র পার্কটি ভিজিট করে বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।এ কারণে আমরা পার্কটি বন্ধ করে দিয়েছি।

এই কর্মকর্তা জানান, সংস্কার ও নতুন খেলনা সংযোজন করে ভিন্ন আঙ্গিকে স্বল্প সময়ে পার্কটি শিশুদের মাঝে ফিরিয়ে দেব।

উদ্বাধনের তিন বছরে পা দিয়ে বন্ধ হয়ে গেল পার্কটি। ২০১৬ সালের ২৯ জানুয়ারি আড়ম্ভর আয়োজনের মধ্য দিয়ে পার্কটির দুয়ার খোলেন তৎকালীন মেয়র আহসান হাবিব কামাল। গ্রীণ সিটি পার্ক নির্মাণে দেড় কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল বলে জানায় নগর ভবন সূত্র। যদিও পার্কটি উদ্বােধনের আগে থেকেই অভিযোগ ছিল নির্মাণে অনিয়ম, স্থায়ীত্বহীন সামগ্রী দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। বর্তমানে পার্কের প্রতিটি খেলনা বিকল ও ভেঙ্গেচুরে গেছে।এই পার্কটির নির্মাতা ছিল তৎকালীন সিটিমেয়র কামাল পুত্র রুপন।ঐ সময় তিনি অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে যাচ্ছেতাই ভাবে পার্কটি নির্মান করেছেন।এখন পার্কটিতে রংয়ের বদলে জং ধরেছে। জানা গেছে, অনেক খেলনাই চুরি হয়ে গেছে।

উদ্বোধনকালে পার্কে দুটি দোলনা, তিনটি স্লিপার, একটি রোলার, দুটি ব্যালেন্স রাইডারসহ ১৮ রাইডস্ ছিল। সৌন্দর্যবর্ধণে স্থাপন করা হয়েছিল ডিজিটাল ট্রি , টাওয়ার, এলইডি লাইট ও সিকিউরিটি বাল্ব। উদ্বাোধনের এক বছরের মাথায় পার্কের দুটি দোলনা, রোলার রাইডারটি, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, কুকুর, ড্রাগনসহ নয়টি খেলনা ভেঙে গেছে। প্রবেশপথে স্থাপিত বৈদ্যুতিক তুলা গাছটি ভেঙে পড়েছে। জ্বলছে না ডিজিটাল লাইট। চারপাশে ৬১টি সিকিউরিটি বাল্বের অধিকাংশ নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে টয়লেট ব্যবহার অনুপযোগী। শুধু অবকাঠামো নয়, পার্কের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণেও অবহেলার অভিযোগ রয়েছে বিসিসি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

পার্কে খাবারের জন্য ছিল গ্রীণ ক্যাফে নামে একটি রেস্তােরা। সেটিও এখন বন্ধ। তার ব্যবস্থাপক হাসান জানান, পার্ক বন্ধ থাকায় ব্যবসাও বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু কর্মচারীদের টাকা সঠিক সময়েই পরিশোধ করতে হয়। এজন্য লোকসান গুনতে হচ্ছে।

বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল ঘোষ জানান, দেড় কোটি টাকায় নির্মিত এই পার্কে অবশ্যই অনিয়ম হয়েছে। যার কারণে মাত্র ৩ বছরের মাথায় পার্কটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। আমরা চাই পার্কটি আবারও সুন্দর করে সাজানো হোক সময় উপযোগী করে।