বরিশালে পরকীয়া বাধা ও যৌতুক না দেয়ায় স্ত্রীকে অবরুদ্ধ করে রাখলো স্বামী

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বরিশাল নগরীতে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনে আহত করে ২০ ঘন্টা বাসার মধ্যে আটকে রেখেছে স্বামী শফিকুল ইসলাম পলাশ। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় স্ত্রীর ভাই শুক্রবার বিকেল ৪টায় গুরুতর অবস্থায় আহতকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতের নাম নাসরিন আক্তার রূপা। সে নগরীর ২৩নং ওয়ার্ড ফকির বাড়ি স্কুল এলাকার সেকান্দার আলীর মেয়ে।

অভিযুক্ত পলাশ প্রতিবেশী আলামিন হোসেন ছেলে ও নর্দান সাউথ ইউনির্ভাসিটির ছাত্র। এছাড়া হাসপাতালে এসে চিকিৎসাধীন রূপা ও তার ভাই বিল্লালকে হত্যার হুমকি দেয় পলাশ।

আহত রূপা জানান, গত ৬ বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর পলাশ ঢাকার প্রাইভেট কলেজ নর্দান ইউনির্ভাসিটিতে ভর্তি হয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করে। ঢাকায় গিয়ে পলাশ স্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে রূপার প্রতি অনীহা প্রকাশ করে। প্রায় সময় পারিবারিক তুচ্ছ বিষয় নিয়ে রূপার সাথে পলাশ ঝগড়াবিবাদের লিপ্ত হয়। এছাড়া বরিশালে আসলে রূপার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এছাড়া শ্বশুড়-শাশুড়ীর প্ররোচনায় স্ত্রী রূপার কাছে তার বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে পলাশ। রূপা যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করে পলাশ ক্ষিপ্ত হয়। এরই জের ধরে ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় পলাশ স্ত্রী রূপাকে পুনরায় যৌতুক এনে নিতে বলে। কিন্তু রূপা রাজি না হওয়ায় পলাশ রড দিয়ে এলোপাথারি পিটিয়ে তাকে আহত করে। পলাশের নির্যাতনের মাত্রা এতটাই ছিলো যে রডের আঘাতে রূপার পুরো শরীরে কালো দাগ পড়ে গেছে।

পরে পলাশ রূপাকে কোন ধরনের চিকিৎসা সেবা না দিয়ে ঘরের মধ্যে শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত আটকে রাখে। খবর পেয়ে রূপার বড় ভাই বিল্লাল হোসেন স্থানীয়দের সহায়তায় রূপাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

রূপা আরো জানান, পলাশ ঢাকায় ভর্তি হওয়ার পর থেকে একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এতে করেই সে আমার প্রতিটি বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করে। আমি বিভিন্ন সময় এর প্রতিবাদ করি। সবমিলিয়ে যৌতুকের টাকা ও পলাশের প্রেমের সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় আমার উপর এমন নির্যাতন করে বাসায় আটক করে রাখা হয়।

অপরদিকে রূপার ভাই বিল্লাল জানান, রূপার নির্যাতনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে অভিযুক্ত পলাশ হাসপাতালের এসে বিল্লালকে হত্যার হুমকি দেয়।

এ ব্যাপারে পলাশ নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে ও অন্য কোন মেয়ের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে।

এ ঘটনাটি সংবাদ প্রকাশ করলে দেখিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদান করে।