বরিশালে নারী সহ প্রতারক চক্রের ছয় সদস্য আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

চাকুরীজীবীদের ফাঁদে ফেলে প্রতারনার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে বরিশার নগরের ভাটিখানা হাসিনা মঞ্জিলের নির্মানাধীণ ভবন থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া তের হাজার টাকা ও আটটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার (২৩ জানুয়ারী) দুপুর ১টায় নগরের আমতলার মোড়রস্থ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি) মোঃ মোশারফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য গত ২০ তারিখ বেলা অনুমান ০৩.০০ ঘটিকায় বাদী মোঃ তারেক খাঁন (৪০), পিং- মোঃ মুসা খাঁন, সাং- কোট খালী, থানা- গলাচিপা, জেলা- পটুয়াখালী, এ/পি-রুপাতলী হাউজিং, রোড নং-১৯, প্রফেসর আঃ ছালাম এর বাড়ি, ৪র্থ তলা ভবনের ২য় তলার ভাড়াটিয়া, থানা-কোতয়ালী মডেল, বিএমপি, বরিশালকে ধৃত ০২নং আসামী আয়েশা আক্তার কাজের বুয়া দেওয়ার কথা বলে ব্লাকমেইল করে মুক্তিপন আদায় করার উদ্দেশ্যে কাউনিয়া থানাধীন ভাটিখানা ০৭নং ওয়ার্ডস্থ “হাসিনা মঞ্জিল” এর নির্মাধীন ভবনের ৪র্থ তলার ০৫নং আসামী মোঃ তানভীর খাঁন এর ভাড়াটিয়া বাসার কক্ষে নিয়ে যায়।

উক্ত কক্ষের দরজা বন্ধ করে আসামী আয়েশা, সুমি আক্তার বাদীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। জোরপূর্বক বাদীর গায়ের জামা কাপড় খোলার চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। অতঃপর ধৃত আসামীদের সহিত অনুমান ৫/৭ মিনিট ধস্তাধস্তির পরে উক্ত রুমের দরজা বাহির থেকে নক করলে ০২নং আসামী আয়েশা আক্তার রুমের দরজা খুলে দিলে তাৎক্ষনিকভাবে বাহির হতে ধৃত আসামী ১) মোঃ সুমন সরদার, ৩) মুন্না চৌধুরী, ৪) মোঃ মনির হাওলাদার, ৫) মোঃ তানভীর খাঁন, ৬) মোঃ জুলহাস সরদার এবং পলাতক আসামী ৭) মোসাঃ সুমি আক্তার, ৮) মোঃ রেজাউলসহ আরো অজ্ঞাতনামা ২/৩জন উক্ত কক্ষে প্রবেশ করলে আসামী আয়েশা আক্তার ও আসামী সুমি আক্তার উক্ত কক্ষ থেকে বাহির হয়ে অপর একটি কক্ষে অবস্থান করে।

সকল আসামী বাদীকে ভয় ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি দেয়। ০১নং আসামী মোঃ সুমন সরদার বাদীর শরীরের জামা-কাপড় খোলার জন্য বলে। বাদী অনিহা প্রকাশ করলে আসামী সুমন বাদীকে বাম কানের উপর সজোড়ে কয়েকটি থাপ্পর মারতে থাকে। উহাতে বাদী শরীরে জখম প্রাপ্ত হয়। অতপর ০৩নং, ০১নং ও ০৫নং আসামীগন জোরপূর্বক বাদীর পরিহিত জামা-কাপড় খুলে উলঙ্গ করে ফেলে এবং তখন উক্ত আসামীরা উক্ত কক্ষে থাকা একটি পুরানো তোয়ালে দিলে বাদী তার লজ্জা স্থান ঢাকে।

০৩নং ও ০৪নং আসামী সুমি আক্তারকে উক্ত কক্ষে নিয়া আসে এবং সকল আসামী জোরপূর্বক বাদীকে উক্ত আসামীর পাশে নিয়া দাড় করায়ে তার শরীর হতে জামা ও প্যান্ট খুলে ০১নং আসামী তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দ্বারা বাদী ও আসামী সুমির পর্ন ছবি তুলে এবং পর্ন ভিডিও রেকর্ড করে রুমের ভিতর আটক করে রেখে জীবন নাশের হুমকি দেয়।

আসামীরা বাদীর নিকট ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। বাদী তার ইজ্জত সম্মান ও জীবন বাঁচানোর জন্য তার বন্ধু ০১নং সাক্ষী টিপুর নিকট হতে বিকাশের মাধ্যমে তাৎক্ষনিক ২০,০০০/- টাকা আসামীদেরকে প্রদান করে এবং বাকী টাকা পরে দেয়ার আশ্বাসে আসামীরা বাদীকে ছেড়ে দেয়। অতপর বাদী মোঃ তারেক খাঁন গত ২২/০১/১৯ খ্রিঃ ডিবি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চায়।

উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এসআই/ মোঃ হেলাল উদ্দিন তার সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় বরিশাল মহানগরীর কাউনিয়া থানাধীন ভাটিখানাসহ বিভিন্ন এলাকায় গতকাল সারাদিন অভিযান পরিচালনা করে। পলাশপুর এলাকা হতে আসামী ১। মোঃ সুমন সরদার (২৬), ২। মোসাঃ আয়েশা আক্তার (২৫), ৩। মুন্না চৌধুরী (২৭), ৪। মোঃ মনির হাওলাদার (২৫), ৫। মোঃ তানভীর খাঁন (২৬), ৬। মোঃ জুলহাস সরদার (২৪) দেরকে সন্ধ্যার পরে ধৃত করেন এবং তাদের নিকট হইতে মুক্তিপন নেওয়া ১৩,০০০/- টাকা উদ্ধার করেন এবং উল্লেখিত কাজে আসামীদের কর্তৃক ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের ০৮ টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ সংক্রান্তে কাউনিয়া থানায় মানব পাচার ও পর্নগ্রাফী প্রস্তুত করার অপরাধে মামলা রুজু হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।

প্রকাশ থাকে যে, এ গ্রুপটি ইতিপূর্বে অনেক উচ্চপর্দস্থ সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, গন্যমান্য ব্যক্তিদের মহিলা দ্বারা উপরোল্লিখিত কৌশল ছাড়াও বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে ফাঁদে ফেলে মুক্তিপন আদায় করেছে বলে সাক্ষী প্রমান পাওয়া গিয়াছে।