 
                                            
                                                                                            
                                        
ঢাকার চকবাজারের মতো বরিশালে ইফতারের ঐতিহ্যবাহী কোন নির্ধারিত স্থান নেই। তারপরও গত কয়েকবছর ধরে নামিদামি কিছু খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁ বরিশাল নগরের ইফতার বাজারকে চাঙা করে রাখছে।
এরইমধ্যে নগরবাসীর কাছে ইফতার বাজারের বিভিন্ন প্রকারের হালিম, মোরগ ও মুরগি মাসাল্লাম,খাসির লেগ রোস্ট, তেহারী, বিরিয়ানি, বোরহানি, শাহি জিলাপি ও জর্দ্দা বেশ জনপ্রিয়। প্রথমদিকে বেচা-বিক্রি কম হলেও, যারা এসব পণ্য বিক্রি করছেন তাদের দিন শুরু থেকেই ভালো কাটছে।
বরিশাল নগরের পুলিশ লাইন রোডস্থ হট প্লেট রেস্টুরেন্টের বিক্রয় কর্মীরা জানান, করোনার কারনে বিগত দুই বছর বেশ খারাপ কেটেছে বরিশালের ইফতার বাজার।আর এবারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারনে ইফতার বাজারে নতুনভাবে প্রভাব পরতে পারে। যদিও বিশেষ বা ঐতিহ্যবাহী আইটেম যারা বিক্রি করছেন তাদের বেঁচাবিক্রি ভালোই যাচ্ছে।
বগুরা রোডের নাজেমস রেস্তোরার হৃদয় জানান, তাদের এখানে ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের তেহারি ও বিরিয়ানি। এটা সারাবছর ধরেই নিজস্ব জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে।
এরবাহিরে রমজানে বেশি চলছে স্পেশাল হালিম, মুরগি মাসাল্লাম, খাসির রান, কালাভূনা, জিলাপি। বিগত সময়ের মতো এবারেও প্রথম দিন থেকেই স্পেশাল এসব আইটেম ঘিরে ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে।
একই কথা বললেন নগরের বগুরা রোডের বাসিন্দা ও ক্রেতা বাহাউদ্দিন গোলাপ।তিনি বলেন, বরিশালে ঢাকার চকবারের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রচুর ইফতার আইটেম এবং চকবাজারের মতো নির্ধারিত জায়গা নেই।
তবে কিছু কিছু রেস্তোরাঁ ও খাবার হোটেল ঘিরে বরিশালের ইফতার বাজার চাঙ্গাই বলা যায়। করোনা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও এসব হোটেল-রেস্তোরাঁর ইফতার কিনতে মানুষের ভিড় দেখা যায়।
মাসুদ শিকদার নামে অপর একজন ক্রেতা বলেন, বরিশালের বেশিরভাগ পরিবারই ইফতার বাসায় তৈরি করেন এখনও। তবে বিশেষ বা অনন্যসুলভ খাবারের চাহিদা সবারই রয়েছে।
তাই এসব খাবার খুঁজতে ও কিনতে ইফতার বাজারে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। যেমন মুরগি মাসাল্লাম, খাসির রান, গরুর চুইঝাল, জিলাপি, জর্দ্দা, হালিম, বোরহানি কিনছেন বেশিরভাগ ক্রেতারা।
তবে নামের বিশেষণে ইফতার সামগ্রীর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি বলে জানিয়েছেন জিয়াউল করিম নামে একজন ফুড ব্লোগার।
তিনি বলেন, বরিশালে নিত্য নতুন রেস্তোরা হচ্ছে। আর তারা ইফতার বাজার ধরতে পণ্যের নাম এমনভাবে রাখছেন যা দেখে ক্রেতাদের কৌতূহল বেড়ে যায়।
আর সেসব পণ্য খেতে যদি সু-স্বাদু হয়, তাহলে বাজার ধরতে সময় লাগে না। যেমন শাহী জিলাপি, জর্দা, ছোলা মাসালা, লাহরি বিফ হালিম, রুমালি রুট এসব নামগুলোতে ভিন্ন মাত্রা থাকায় পণ্যগুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছে খুব দ্রুত।
আবার এবারে বরিশালে গরুর চুঁইঝাল নতুন, তাই এটার আয়োজন যারা করেছেন তাদের বাজারে আলাদা চাহিদা রয়েছে। একবার হলে স্বাদ নিতে চাচ্ছেন অনেকেই।
সব হিসেব কষেও বরিশালে ইফতারিতে হালিম এবং বোরহানির পাশাপাশি মুরগির বিভিন্ন আইটেম সব থেকে বেশি চলে এবং জনপ্রিয় বলে দাবি করেছেন নগরের কালিবাড়ি রোডস্থ আম্মাজান হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মো. ফয়সাল হোসেন।
তিনি বলেন, আমাদের হালিম একটা বিশেষ ঐতিহ্যবহন করে। প্রতিবছর ভালোই বিক্রি হয়, এবারেও আশা করি কম হবে না। তবে আমাদের পাশাপাশি নগরের আরও বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁরে হালিম জনপ্রিয়।