ব্রিটিশ শাসনামলে ইন্ডিয়ান জেনারেল নেভিগেশন (আইজিএন) ও রিভার স্টিম নেভিগেশন (আরএসএম) কোম্পানি বরিশালের রাজা বাহাদুর সড়কে নির্মাণ করে কাঠের দ্বিতল বাংলো বাড়ি ‘হিমনীড়’। বাংলোর সামনে খনন করা হয় বড় পুকুর। বছরজুড়ে পদ্ম ফুল ফোটার কারণে যেটি এখন পদ্মপুকুর নামেই পরিচিত। পুকুরের চারপাশে অর্জুন, শ্বেতচন্দন, অশোক ও অশ্বত্থসহ বিভিন্ন গাছ। সৌন্দর্যের কারণে বাংলো বাড়িটি বরিশালের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বহু আগেই। তবে সম্প্রতি এখানে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), যা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে দর্শনার্থীদের মধ্যে।
নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানসংলগ্ন প্রায় ছয় একর জমিজুড়ে হিমনীড় বর্তমানে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়। হিমনীড় ও পদ্মপুকুরের পাশাপাশি এখানে আরো রয়েছে শিলানীড়, ছায়ানীড় ও চানবাংলো। সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ পুরো এলাকায় জনসাধারণের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। ফলে বেড়াতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের।
অভিযোগের সত্যতা জানতে হিমনীড়ে গেলে দায়িত্বরত আনসার সদস্য জানান, এখানে আর অনুমতি ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশের সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন-অর রশিদ বলেন, হিমনীড়ে অফিস চলাকালীন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বহিরাগতরা প্রবেশ করে পরিবেশ বিনষ্ট করে। যে কারণে, যখন-তখন প্রবেশ ঠেকাতে আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করেই দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে বরিশাল চারুকলার সংগঠক সুশান্ত ঘোষ বলেন, হিমনীড় বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএর অধীনে থাকলেও এটি নগরীর অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ জলিল এখানকার বাংলোতে দপ্তর স্থাপন করেছিলেন। ফলে এটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গেও জড়িত। প্রখ্যাত নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা কয়েক বছর আগে হিমনীড়ে শিশুদের জন্য ‘এসো গাছ চিনি’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন। ফলে সামগ্রিকভাবেই এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকা প্রয়োজন।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের বরিশালের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, বিআইডব্লিউটিএ তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে করা হবে।”