বরগুনায় মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে জখম, মিথ্যা মামলায় হয়রানি

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

তুচ্ছ ঘটনায় বরগুনায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করার ১৯ দিন পার হলেও বিচার পাচ্ছে না বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবার।

উল্টো বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বারের নাতিদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, বরগুনা সদরের আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আউয়াল ২৩ এপ্রিল সকালে গরু দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বারের বড় ভাইয়ের ছেলে জহিরুল ইসলামের ক্ষেতের মুগডাল নষ্ট করে। জহিরুলের ছেলে ছোটন প্রতিবাদ করতে গিয়ে আউয়ালকে গালমন্দ করেন।

এতে আউয়াল অপমানবোধ করেন। ওই দিন বিকাল ৫টার দিকে আউয়াল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে তার বসতঘরে ডেকে নেয়।

উভয়ের মধ্যে প্রথমে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আউয়াল উত্তেজিত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাম হাতে মারাত্মক জখম হয়। এরপর হারুন ও চম্পা রড দিয়ে আবদুল জব্বারকে পিটিয়ে জখম করে।

৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বুধবার বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রিপন বাদী হয়ে আউয়ালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাহবুব আলম জখমী বীর মুক্তিযোদ্ধার মেডিকেল সার্টিফিকেট তলবসাপেক্ষে ২২ মে আদেশের দিন ধার্য রেখেছেন।

 

মামলার অন্য আসামিরা হলো- বরগুনা সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা গ্রামের সোহরাব হাওলাদারের ছেলে হারুন ও আউয়ালের স্ত্রী চম্পা।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রিপন বলেন, মামলা করার পরে আসামি আবদুল আউয়াল উল্টো তার কলেজপড়ুয়া দুই মেয়েকে দিয়ে ২৮ এপ্রিল বীর মুক্তিযুদ্ধার নাতি শাকিল, রাকিব, রিয়াজ ও অ্যাডভোকেট মো. খলিলুর রহমানের নামে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে হয়রানিমূলক একটি মিথ্যা মামলা করেন।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার ১৯ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর সোমবার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফেরার সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ১৯৭১ সালে সম্মুখযুদ্ধ করে বেঁচে আছি।

আজ ৭৫ বছর বয়সে আউয়াল ও তার লোকজন তুচ্ছ ঘটনায় আমাকে হত্যা করার জন্য তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। তিনি আরও বলেন, আমার নাতিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে আউয়াল। আমার দুঃখ হচ্ছে, আমাদের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের কেউ আমার বিপদে পাশে নেই। আমাকে ১৯ দিনে হাসপাতালে কেউ দেখতেও আসেনি।

আমার ঈদ কেটেছে হাসপাতালে। কষ্টে আমার বুকটা ফেটে যায়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। তিনি ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে কেউ থাকেন না।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল বলেন, মুক্তিযোদ্ধাকে মারিনি। ছোট ছোট ছেলেদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। আমরা আপস হতে চাই।

মুক্তিযোদ্ধার নাতিদের বিরুদ্ধে কেন মামলা করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপরাধ করেছে তাই মামলা করেছি।