বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে ও বিএম কলেজছাত্রকে হত্যায় ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে বরিশাল জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত এ রায় দেন।
একইসঙ্গে আরও তিনজনকে ৭ বছর করে ও চারজনকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টিএম মুসা এ রায় প্রদান করেন।
ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সবুজ জানান, যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ (আমৃত্যু নয়) প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাট থানার আন্ধারবুনিয়া গ্রামের মো. ফরিদ হোসেন, রুহুল আমিন, আনিছ মাতব্বর, মানিক হাওলাদার ও মহরম হাওলাদার।
এছাড়া ইব্রাহিম হাওলাদার, স্বপন হাওলাদার, সোহান হাওলাদারকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
অপরদিকে রফিক হাওলাদার, আলতাফ হাওলাদার, সবুজ হাওলাদার ও মানিক হাওলাদারকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডসহ ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে আদালত।
দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদী রেশিয়া বেগম মামলায় উল্লেখ করেন, বাদীর পরিবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মী ছিল। ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ নির্বাচনী কথাবার্তা নিয়ে আসামিরা বাদীর ছেলে সমীর চারুকে মেহেন্দিগঞ্জের বড়ইয়া বাজারে ফেলে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ২০১৬ সনের ১৭ মার্চ ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৭ সনের ৬ ডিসেম্বর মামলার চাজর্শিট দেন অর্গানাইজ ক্রাইম সিরিয়াস ক্রাইম ফ্লোরাও সিআইডির মো. আলী হায়দার। আদালত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার বিকেলে এ রায় দেন।
এছাড়া বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মাহিন সরদার কিসলুকে (২৫) বন্ধুরা নগরের চকবাজারের একটি হোটেলে নিয়ে হত্যা করে। কিসলু অর্নাসের ফরম ফিলাপের জন্য ঢাকা থেকে বরিশাল এসে হোটেলে উঠেছিল।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- নলছিটির আকন বাড়ির মৃত মিরাজ হাওলাদারের ছেলে মো. বশির হাওলাদার। আদালত বশির হাওলাদারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
নিহতের বাবা মো. এনায়েত হোসেন বাদী হয়ে ২০১৫ সনের ১৬ মে মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সনের ৩১ জুলাই মামলার চার্জশিট দেন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মো. আসাদুজ্জামান। আদালত ৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার বিকেলে রায় দেন।