বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, ঢাকার পরিচালক (বরখাস্ত) মুনসী মুয়ীদ ইকরামসহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপ-পরিচালক মো.বেনজির আহমেদ পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহসহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট কমিশনে জমা দেন। পরে কমিশন চার্জশিট অনুমোদন দেয়। শিগগিরই এ চার্জশিট সংশ্লিষ্ট আদালতে দাখিল করা হবে।
তদন্তকালে বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহারনামীয় ও তদন্তে আগত সর্বমোট ৭১ জন আসামির বিরুদ্ধে (দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৭১/১০৯) এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশিট দাখিলের সুপারিশ করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন-
বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস আগারগাঁওয়ের পরিচালক (বরখাস্ত) মুনসী মুয়ীদ ইকরাম, সাবেক উচ্চমান সহকারী (বরখাস্ত) মো. শাহজাহান মিয়া, মো. সাইফুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক (প্রশাসন), (বরখাস্ত), বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এস এম নজরুল ইসলাম, সাবেক সহকারী পরিচালক (বরখাস্ত) এস, এম, শাহ্জামান, সাবেক উচ্চমান সহকারী মো. আনোয়ারুল হক, সহকারী পরিচালক ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট উম্মে কুলসুম, সহকারী পরিচালক নাসরিন পারভীন নুপুর, বর্তমানে পাসপোর্ট ও ভিসা উইং, বাংলাদেশ মিশন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র, মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, দাগনভূঞা, ফেনী, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ, সাইদুর রহমান, আত্রাই, নওগাঁ, মোহাম্মদ রেজাউল করিম, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ, সোহেল রানা, নবাবগঞ্জ, ঢাকা, শহিদ শেখ, ফরিদপুর সদর, আনোয়ার হোসেন শরীফ, ফেনী সদর, আমিন উদ্দিন, বিয়ানীবাজার, সিলেট, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, বিয়ানীবাজার, সিলেট, মোহাম্মদ আরিফ হাসান, লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ, মোহাম্মদ দিপু, শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ, দেলোয়ার হোসেন, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, মো. ফরহাদ খান, টংগীবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ, কাজী মো. আল আমিন, লাঙ্গলকোট, কুমিল্লা, এস এম হিমেল, হোমনা, কুমিল্লা, হাবিবুর রহমান, ছাতক, সুনামগঞ্জ, মো. হানিফ শিবলু, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মধুখালী, ফরিদপুর, সহিদ কামাল, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী, ইমরান হোসেন, মুন্সিগঞ্জ সদর, সেন্টু চন্দ্র বিশ্বাস, কুমিল্লা সদর দ., মো. জসিম উদ্দিন, কুমিল্লা সদর দ., এম এন সাওন সাদেক, বিয়ানীবাজার, সিলেট, মোহাম্মদ আরিফ খলিফা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, ফারুখ আহমেদ, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আব্দুল বারেক, টাঙ্গাইল, ইয়াসিন আরাফাত, সোনাইমুড়ি, নোয়াখালী, তুষার খান, নওয়াবগঞ্জ, ঢাকা, মোহাম্মদ শামীম হোসেন, সাঁথিয়া, পাবনা, শিবলী আহম্মেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, মনির খান থানা-মির্জাপুর, টাঙ্গাইল, মোহাম্মদ শাহ জালাল, সাভার, ঢাকা, মোহাম্মদ মামুন, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ, মিলন বেপারী, মুন্সিগঞ্জ সদর, শাহজাহান আহমেদ, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, জামাল উদ্দিন, কুমিল্লা সদর দ., সামছুদ্দিন, সোনাইমুড়ি, নোয়াখালী, মো. জালাল মোল্লা, নওগাঁ সদর, মুজিবুর রহমান, গোলাপগঞ্জ, জেলা-সিলেট, মো. আমির হোসেন শরিফ, উজিরপুর, বরিশাল, মোহাম্মদ বাবর উদ্দিন, মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা, মোহাম্মদ কামরুল হাসান, মিরসরাই, চট্টগ্রাম, রাশেদ খান, রামগঞ্জ, লহ্মীপুর, মোহাম্মদ ফয়েজ আহম্মেদ, বিয়ানীবাজার, সিলেট, মোহম্মদ জামাল উদ্দিন, কোতয়ালী, যশোর, মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, লাঙ্গলকোট, কুমিল্লা, মো. বিল্লাল মিয়া, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা, মাহফুজুর রহমান সবুজ, লাকসাম, কুমিল্লা, মো. মিজানুর রহমান, দাউদকান্দি, কুমিল্লা, আফজল চৌধুরী, কানাইঘাট, সিলেট, ইসমাইল হোসেন, শালিখা, মাগুরা, আলাউদ্দিন মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কোয়েস আহমেদ, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, রানা আব্দুল মান্নান, নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জুয়েল আহমেদ, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, মামুন রশিদ, কানাইঘাট, সিলেট, মোহাম্মদ মান্নান, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, মোহাম্মদ শফিকুল আলম মান্না, বিয়ানীবাজার, সিলেট, মো. ইব্রাহিম খলিল, ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, সিলেট, শহিদুল ইসলাম মজুমদার, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, মো. রাকিব মিয়া, শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ ও মোহাম্মদ ইসমাইল সরকার, মুরাদনগর, কুমিল্লা।
দুদক সূত্রে জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ৬৫ জনকে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দেখিয়ে কর্মকর্তার নাম ও পদবি ব্যবহার এবং কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে জাল অনাপত্তিপত্র (এনওসি) সৃজন করে ডিসেম্বর ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত সময়ে ৬৫টি সাধারণ পাসপোর্টকে অফিসিয়ালী রূপান্তর করে।
ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে কেউ কেউ অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে গমন/বসবাস করছেন। মিথ্যা তথ্য ও জাল অনাপত্তি সনদের ভিত্তিতে সাধারণ পাসপোর্টকে অফিসিয়াল হিসেবে রূপান্তর এবং সেই পাসপোর্টে বিদেশে গমন করেন। এ রকম ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহারকারী চার বাংলাদেশিকে তুরস্কে গ্রেফতার হয়। পরে জালিয়াতি উদঘাটিত হওয়ায় তুরস্ক সরকার তাদের দেশে ফেরত পাঠায়।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ১৮ পাসপোর্টধারী ও পাসপোর্ট অফিসের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে দুদকের উপ-পরিচালক মো. বেনজির আহমেদ মামালাটি করেন।
মামলাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ এ চার্জশিট সুপারিশ করে কমিশনের প্রতিবেদন দেন।