পর্যটক বরণে ব্যস্ত ঝালকাঠির পেয়ারা রাজ্য। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ফলে এবার পর্যটকদের চাপ কয়েকগুণ বেশি হবে বলে আশাবাদী এলাকার লোকজন। পর্যটকদের আগমনে বাড়বে পেয়ারার চাহিদা, সেই সঙ্গে বাড়বে দামও।
অপরদিকে পর্যটকদের জন্য ভাসমান পেয়ারা বাজারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে সচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন। বিনোদনের সুবিধা দিতে গড়ে উঠেছে কয়েকটি পার্ক। পেয়ারা বাগানের মধ্যেই এ পার্কগুলো স্থাপন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ব্যবস্থাপনায়। সেই সঙ্গে রয়েছে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও বিভিন্ন জাতীয় ফাস্টফুড।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভীমরুলী ভাসমান পেয়ারা বাজার সংলগ্ন মাত্র ৩০ গজের মধ্যেই রয়েছে গৌরব ইকোপার্ক। ২ একর জমিতে নিজস্ব অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় এ পার্কটি গড়ে তুলেছেন গৌতম রায় সুমন। পার্কটির ভেতরে রয়েছে অর্ধশত বসার স্থান, শিশুদের খেলার জন্য দোলনাসহ বিভিন্ন ধরনের আয়োজন।
ঝালকাঠি সদর উপজেলা, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি ও বরিশালের বানারিপাড়া উপজেলার ৫৫ গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠেছে পেয়ারা রাজ্য। প্রতি বছর আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস এলেই পেয়ারার কারণে পাল্টে যায় ওই অঞ্চলের চিত্র।
প্রতিদিন শত শত নৌকায় ভাসমান বাজারে চাষিরা আসে পেয়ারা বিক্রি করতে। ট্রাক ও বড় বড় ট্রলার নিয়ে আসেন পাইকাররা পেয়ারা কিনতে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় আরিচা ফেরিঘাটের বিড়ম্বনা না থাকায় পাইকার ও পর্যটকদের আগমন প্রতি বছরের চেয়ে এ বছর বেশি হবে বলে আশাবাদী পাইকাররা।
ভীমরুলী এলাকার পেয়ারা চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পেয়ারা চাষ তাদের ঐতিহ্য। পেয়ারা চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। এ বছর বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে তেমন বৃষ্টি হয়নি। যা হয়েছে তাও আবার উত্তর-পশ্চিম দিকের ঠাণ্ডা বৃষ্টি। ওই বৃষ্টির কারণে পেয়ারা গাছে ফুল দেরিতে এসেছে।
যদি পূর্ব দিকের বৃষ্টি হতো তাহলে তা একটু গরম থাকতো। আর পেয়ারা গাছেও ফুল তাড়াতাড়ি আসতো। পর্যটক রাজু খান বলেন, আমরা প্রতি বছর এখানে আসি। তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার অনেক বেশি পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ফলে এ অঞ্চলের শুধু পেয়ারাই নয় অন্যান্য কৃষি পণ্যও ঢাকাসহ সারা দেশে অল্প সময়ে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।