নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা চত্বরে ওই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে তারা এ মানববন্ধন করেন। এসময় স্কুলের কিছু শিক্ষার্থীও উপস্থিত ছিলো।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।
পরে এলাকার ছয়জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে – প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম আত্মীয়করণ করে স্কুল পরিচালনা করে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক তায়জুল ইসলাম বলেন, “ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে স্কুল থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে।”
“আমি নিজে জায়গা দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। তবে তাদের অভিযোগের তদন্ত হোক, প্রমাণিত হলে আমি স্বেচ্ছায় চলে যাব।”
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ যতগুলো অভিযোগ করা হয়েছে সবগুলো মিথ্যা। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বকে সুযোগে কাজে লাগাতে চাইছে। আমি চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। দোষী হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম নিজের জায়গা দিয়ে শ্রম ঘাম দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে শুরু থেকেই ভগ্নিপতি ও সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দিতে চাইছেন। অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক। দোষী হলে প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে উপজেলার হাছলা গ্রামে এক একর ২৫ শতাংশ জায়গার ওপর হাছলা উচ্চ বিদয়ালয়টি স্থাপিত হয়। এর জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা বর্তমান প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম। পরে ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ে একটি চারতলা একাডেমিক ভবন রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ১২ জন শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী রয়েছে। শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৮৭ জন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা কবির সাংবাদিকদের বলেন, এলাকার লোকজন আমার কাছে এসে একটা অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হবে। পরে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আসলে তদন্ত ছাড়া কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তাদের দাবি অনুযায়ী একজন সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত প্রধান শিক্ষক ছুটি নিয়েছেন।