ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হয়েছে। জেলার বিজয়নগর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমানকে রংপুর ও নাসিরনগর থানার ওসি এ টি এম আরিচুল হককে বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর থেকে দুই ওসির বদলির বিষয়ে আদেশ জারি করা হয়।
বুধবার (৯ জুন) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বদলি পুলিশের নিয়মিত ব্যাপার। দুই ওসিকে বদলি করা হলেও ওই দুই থানায় এখনো নতুন কাউকে পদায়ন করা হয়নি।’
গত ২৬-২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের পর একে একে পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলির হিড়িক ওঠে। এখন পর্যন্ত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) রহিজ উদ্দিন, বিশেষ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার আলাউদ্দিন চৌধুরী, সদর মডেল থানার ওসি মো. আবদুর রহিম, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন, সরাইল থানার ওসি নাজমুল আহমেদ, সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান, পরিদর্শক (অপারেশন) ইশতিয়াক আহমেদ ও জেলা পুলিশের কর্মরত ১৩ জন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) বদলি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এসময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, প্রেসক্লাব, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরসহ ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এই ঘটনায় ১২ জন নিহত হন। মামলা দায়ের করা হয় ৫৬টি। এরমধ্যে মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় চারটি, সরাইল থানায় দুটি ও রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে।