 
                                            
                                                                                            
                                        
নতুন নির্বাচনের পথ বের করতে জাতীয় সংলাপের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনকে কেউ অবাধ বলছে না।
তাই বছরের প্রথম দিকেই সবার সঙ্গে জাতীয় সংলাপ করুন। এটাই সবচেয়ে ভালো পথ। সংলাপের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক- কীভাবে সংবিধান মেনে নির্বাচন করে সংসদ ও সরকার গঠন করা যায়।
বঙ্গবন্ধুর স্ব্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গণফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল বলেন, নির্বাচনের দিনে ভোট হয়নি। ৪৮ বছর পরে ৩০ ডিসেম্বরের যে ঘটনা ঘটেছে, তা ভাবতেও পারছি না। এটা হওয়ার কথা নয়। সরলভাবে বলেছিলাম, সকালে সকালে গিয়ে ভোট দেবেন; কিন্তু ঘটনা তো ২৯ তারিখ রাতেই ঘটে গেছে। কেউ টেরও পেলাম না যে, আমাদের ভোট হয়ে যাচ্ছে।
কেন এ রকম অস্বাভাবিক কাজ হচ্ছে? এর থেকে ঘোষণা দিয়ে দিতে পারতেন যে তৃতীয়বারের জন্য একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন, তিনশ’ জন সাংসদ হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, মানসিকভাবে ভারসাম্য না হারালে কেউ এসব করতে পারে না। চুপি চুপি রাতে কী হলো আর সকালে বলে দিল- হয়ে গেছে। এটা কোনো স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে হওয়ার কথা নয়। তিনি বলেন, রাষ্ট্র নিয়ে এভাবে খেলা করা চলে না। যারা এসব করছে তারা না বুঝে করছে। এই ধরনের তথাকথিত নির্বাচন কোনো সুস্থ মানুষের করার কথা নয়। মানসিকভাবে কেউ সুস্থ থাকলে এসব করতে পারে না। এটা অসুস্থ মানসিকতার পরিচয়। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন যে, রাজনীতির পরিবর্তে রাজ-চালাকি হচ্ছে। আমরা রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছি রাজ-চালাকিতে। আমি বলব, যে নির্বাচন হয়েছে সেটা রাত চালাকির একটা সুন্দর উদাহরণ। আমরা বলব, রাত চালাকি থেকে বিরত থাকুন, জনগণের সামনে সবকিছু তুলে ধরুন। সংবিধান অনুযায়ী আলাপ-আলোচনা করে ব্যবস্থা নিন। এ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, অতি ক্ষমতার লোভে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে, বিবেক ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এ ধরনের ভোট ডাকাতির নির্বাচন আর কোথাও হয়েছে বলে শুনিনি। এভাবে তিনশ’ আসনে ঘুষ দিয়ে, দুর্নীতি করে, সব প্রশাসন যন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে কোনো সরকারের পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আজকে প্রতিদিন আওয়ামী লীগ হত্যা করছে, সংবিধানকে হত্যা করছে। তারা অনর্গল মিথ্যাচার আর প্রতারণা করছে। দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, কেউ বলতে পারবে না যে নির্বাচনের দিন সে ভোট দিতে পেরেছে। আর যে দিয়েছে সে একাই ২০০-এর উপরে দিয়েছে। এতে পুরো বিশ্ব হতবাক।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, মোকাব্বির খান, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বীরপ্রতীক, মেজর (অব.) আসাদুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন।