দেশের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী একথা জানান।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি (বিএফডিএ) ২০২২-২০২৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র এবং দেশীয় ওটিটি মাধ্যমে মুক্তিপ্রাপ্ত ওয়েব ফিল্ম নির্মাণের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন শাখায় অবদান ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য প্রথমবারের মতো এ অ্যাওয়ার্ড বিতরণ করেছে এবং অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র অত্যন্ত শক্তিশালী একটি মাধ্যম। এ মাধ্যমকে বাংলাদেশে আরও শক্তিমত্তা নিয়ে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিবেশ তৈরির জন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে এবং তাদের মতামত নিয়ে সরকার সবকিছু করবে। চলচ্চিত্র দিয়ে বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে তুলে ধরা সম্ভব।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে এফডিসির (চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন) গোড়াপত্তন হয় এবং এফডিসির মাধ্যমে আমাদের শিল্পী-পরিচালকরা যারা চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা তার প্রতিদান দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের চলচ্চিত্রের বিশাল ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে আমাদের চলচ্চিত্রের বিভিন্ন পর্যায়ে ভূমিকা রেখেছিল।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সমাজে অনেক পরিবর্তন হয়েছে যে পরিবর্তনগুলো ইতিবাচক। এ পরিবর্তনগুলো আমাদের সামনে অনেক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এ পরিবর্তনগুলো আপাত দৃষ্টিতে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ চ্যালেঞ্জকে কীভাবে সুযোগ হিসেবে আমরা পরিবর্তন করতে পারি, সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে।
দেশের সিনেমা হলগুলো অর্থনৈতিকভাবে লাভবান না হলে চলচ্চিত্র সমস্যার সম্মুখীন হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিনেমা হল যদি সচল থাকে এবং মানুষকে যদি হলে আনা যায় তাহলে চলচ্চিত্রের সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব। পুরো বাংলাদেশ বিভিন্ন জায়গায় সিনেপ্লেক্স এবং মাল্টিপারপাস সিনেমা হল তৈরি এবং সেগুলো কীভাবে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক করা যায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
তিনি বলেন, দেশে নির্মিত ভালো মানের চলচ্চিত্র দেশের হলগুলোতে হলিউড বা অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্রকে প্রতিযোগিতায় পেছনে ফেলছে। সে যোগ্যতা এ দেশের চলচ্চিত্রের রয়েছে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক সময় প্রযোজকরা দেশের বাইরে গিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা নিচ্ছে। কারণ দেশে এ সুবিধাগুলো নেই। আমরা যদি দেশে এ সুবিধাগুলো দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি, এফডিসি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আধুনিকীকরণ করতে পারি তাহলে এফডিসি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে। এজন্য এফডিসি বা এ ধরনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করার বিষয় নিয়ে সরকার কাজ করছে।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্বপ্নধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ উর রশিদ এবং বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন।