শায়েখে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে থানকুনি পাতা নিয়ে গতরাতে যে স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ একটা গুজব, আমরা এমন কোন স্বপ্ন দেখিনি এবং এব্যাপারে কাউকে কিছু বলিনি।’
আজ ফজরের নামাজের পর চরমোনাই আল কারীম জামে মসজিদে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ এতে কান দিবেন না বিভ্রান্ত হবেন না। বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া ও তাওবা ইস্তেগফার করুন।’
বিডি ক্রাইমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চরমোনাই মাদ্রাসা ও দরবারের একাধিক কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, এমনই এক গুজবে রাতের ঘুম হারাম হয়েছে বরিশাল নগরীর বাসিন্দাদের। একজন চরমোনাই পীর/জৌনপুরী পীর স্বপ্ন দেখেছেন এমন গুজবের ওপর ভিত্তি করে তথ্য রটে, থানকুনি পাতা খেলে করোনাভাইরাস আর সংক্রমিত হবে না। মিলবে মুক্তি।
সেই গুজবে সাড়া দিয়ে বরিশালসহ আশপাশের অঞ্চলের বাসীন্দারা রাতের আঁধারে থানকুনি পাতা সংগ্রহে নেমেছেন।
অনেকে ইতিমধ্যে চিবিয়ে খেয়েছেন সে পাতা। তারা বলছেন, এই থানকুনি পাতাই করোনাভাইরাসের উত্তম প্রতিষেধক।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা থেকে শুরু হয়েছে এ গুজব। বরিশালের অনেকে ফেসবুকে এ নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। কেউ কেউ থানকুনি পাতা সংগ্রহ করতে পেরেছেন জানিয়ে ছবিও পোস্ট করেছেন। কেউ কেউ স্বজন, বন্ধুদের ফোন করে ঘুম ভাঙাচ্ছেন এবং জরুরিভিত্তিতে থানকুনি পাতা সংগ্রহের তাগিদ দিচ্ছেন।
বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক এলাকার নূর নবী নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জৈনপুরী পীর সাহেব স্বপ্নে দেখেছেন যে, তিনটি থানকুনি পাতার আর এক গ্লাস পানি খেলে করোনাভাইরাস ছুঁতেও পারবে না। আর এই রাতের মধ্যেই পাতা তিনটি খেতে হবে।তাই তিনি এই গভীর রাতে থানকুনি পাতা সংগ্রহ করতে নেমেছেন।
ফেসবুকে অবশ্য এই গুজব কানে তোলেননি স্থানীয়দের কেউ কেউ। তারা গুজবে কান না দিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, এমন গুজবের উৎপত্তি কোথা থেকে আসলো তা কেউ জানে না।
করোনাভাইরাস নিয়ে বেশ কয়েকটি ভুল ও ভুয়া তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশেষকরে ইউনিসেফের বরাত দিয়ে কিছু ভুল তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষকরা সচেতনতামূলক পোস্ট দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে আরও দু’জনের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন আক্রান্ত দু’জনের একজন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। অন্যজন বিদেশ ফেরত একজনের সংস্পর্শে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, বাকি ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সারা দেশে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ৪ হাজার ৮৩৬ জন। দেশে বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছে ৪৩ জন।