 
                                            
                                                                                            
                                        
কী এমন বয়স হয়েছে ১৬ বছরের কিশোরী মেধাবী ছাত্রী আতোয়ারা আক্তারের। সবে মাত্র জীবনের সিঁড়িতে পা রেখেছে সে। অথচ এ বয়সে মেরুদণ্ডের সমস্যায় থমকে গেছে তার জীবন। তারপরও থেমে নেই এ কিশোরী। বাঁকা পিঠ নিয়েই চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সে।
২ বছর ধরে আতোয়ারার মেরুদণ্ডের হাড় বেড়ে বাঁকা হয়ে গেছে তার পিঠ। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে আতোয়ারার পিঠের মেরুদণ্ড দশমিক ৭০ ভাগ বেড়ে গেছে। যা বাঁকা হয়ে পিঠের বাম পার্শ্বে চলে যাচ্ছে। আর সেই ব্যথায় কাতর মেধাবী ছাত্রী আতোয়ারা। অথচ মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছেন না দিনমজুর বাবা।
আতোয়ারা আক্তার ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া (হাজীপাড়া) গ্রামের দিনমজুর দেরেম আলীর ছোট মেয়ে। সে এবার মাছখুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
দেরেম আলী জানায়, আতোয়ারা যখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো তখন থেকে তার সমস্যা। কিন্তু সমস্যাট বেড়ে গেছে দুই বছর ধরে। এলাকার মানুষের কাছে ধার-দেনা করে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর ও ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বরং আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।
তিনি বলেন, ঢাকায় ইবনে সিনায় স্পেন ও অর্থোপেডিক সার্জন ডা. কামরুজ্জামানকে দেখানোর পর তিনি বলেছেন, অপারেশন করলেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে। একই কথা বলেছেন শাহ আলম নামে আরেক ডাক্তার। দু’জনেই বলেছেন বেসরকারিভাবে অপারেশন করলে সব মিলে প্রায় চার লাখ টাকার মতো খরচ হবে। বিশাল অঙ্কের এ কথা শোনার পরই বন্ধ করে দিয়েছি চিকিৎসা। এত টাকা জোগার করা আমার একার পক্ষে তো দূরের কথা, সব আত্মীয়-স্বজন মিলেও সম্ভব নয়।
দেরেম আলী বলেন, দিনমজুরের আত্মীয়ও দিনমজুর। আমার মতো করুণ অবস্থা আমার আত্মীয়দেরও। কার কাছে সাহায্য চাইবো মেয়েন জন্য। ব্যথায় প্রতিনিয়ত মেয়েটি আমার ছটফট করছে। দেখেও যেন কিছু করার নেই আমার। সব মুখ বুঝে সহ্য করছি।
তিনি আরও বলেন, শুনেছি ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (পিজি) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে সরকারি খরচে এসব রোগের চিকিৎসা হয়। আপাতত ওইসব হাসপাতালেও মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার মতো অর্থ আমার নেই। কেউ যদি এসব হাসপাতালেও আমার মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন হয়তো সে সুস্থ হয়ে যাবে।
আতোয়ারার মা সহিদা বেগম বলেন, বড় মেয়ের বিয়ে দেয়ার পর শেষ ভরসা ছিল আমার ছেলে। বোনের রোগের কথা শুনে সে তার বউ নিয়ে ঢাকায় চলে গেছে আমাদের ছেড়ে। কোনো যোগাযোগও করছে না।
পাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বুলবুল জাগো নিউজকে জানান, মেয়েটির বাবা অত্যন্ত গরিব। এলাকায় দিনমজুরি করেন। আমরা সবাই চেষ্টা করছি মেয়েটি আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার। হৃদয়বান মানুষগুলো পাশে দাঁড়ালে হয়তো সুস্থ হয়ে যাবে আতোয়ারা।
আতোয়ারার বিষয়ে আরও জানতে অথবা সহযোগিতা করতে যোগাযোগ করতে পারেন তার বাবার সঙ্গে। মোবাইল : ০১৭৭০৮৮২৬৭০ (বিকাশ করা)