 
                                            
                                                                                            
                                        
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ঢাকায় থেকেই এখানকার সিটি নির্বাচনে সার্বিক সহযোগীতা করবেন।
আর এটিই দলীয় সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা টিমের সমন্বয়ক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
শুক্রবার (২৬ মে) বরিশালের গৌরনদীতে অনুষ্ঠিত বিশেষ বর্ধিত সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ গত ১ এপ্রিল রাতে নৌপথেৎ বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। এরপর ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ ৫ সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ৯ এপ্রিল নিজ ফেসবুক পেইজের একটি ভিডিওতে সাদিক আব্দুল্লাহকে তার পরিবার ও ঘনিষ্টজনদের সঙ্গে ভারতের আজমির শরীফ মাজারে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এরপর ১৫ এপ্রিল মনোনয়নবোর্ডের সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে বাদ দিয়ে তারই চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে (খোকন সেরনিয়াবাত) মনোনয়ন দেওয়া হয়।
এ খবর বরিশালে ছড়িয়ে যাওয়ার পরপরই সাদিক বিরোধীরা বরিশালের রাজপথে আনন্দমিছিল নিয়ে নেমে পরে এবং সাদিক অনুসারীরা ঘর নেয়। ২০ এপ্রিল সাদিক বিরোধী আওয়ামী লীগের একটি অংশ খোকন সেরনিয়াবাতকে স্বাগত জানিয়ে বরিশাল নগরে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা মঞ্চে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে ধীরে ধীরে রাজপথের নিয়ন্ত্রনে চলে যায় সাদিক বিরোধীদের হাতে, আর নিজেদের গুটিয়ে নেয় সাদিক অনুসারীরা।
এদিকে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের মারধরের ঘটনায় সাদিকের আস্থাভাজন রইজ আহমেদ মান্নাকে তার সহযোগীদের নিয়ে কারাগারে যেতে হয়, সেইসঙ্গে মান্নার নিয়ন্ত্রণে থাকা মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিকেও বিলুপ্ত করে দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর সিটি নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থী সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত ও রাজীব হোসেন খান ছাড়া মেয়র সাদিকের আস্থাভাজন কাউকে দেখা যায়নি নগরে।
এদিকে ১ এপ্রিলের পর টানা দুইমাস হতে চললেও মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালে না থাকায় নগর ভবনের কাজে কিছুটা ধীরগতি চলে এসেছে। নগরের চলমান উন্নয়নমূলক কাজগুলো যেমন থমকে দাঁড়িয়েছে, তেমনি নিয়মিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিষ্কার, মশা নিধনের ওষুধ প্রয়োগ, সড়কের ছোট-খাট খানাখন্দ ভড়াটসহ নিয়মিত কাজগুলোও ছন্দহীন হয়ে পড়েছে। তবে নগর ভবনের কাজ ঠিকঠাক ভাবেই চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে শুক্রবার (২৬ মে) অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচন উপলক্ষে বিশেষ বর্ধিত সভায়ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহকে দেখা যায়নি। তবে তার বাবা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সাদিক এখানে মেয়র ছিলো, তার কিছু অনুসারী বা ভক্ত আছেন, যাদের মনে হয়তো কষ্ট লাগছে। কিন্তু আমাদের এই কষ্ট ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে, যেকোনভাবে হোক খোকন সেরনিয়াবাতকে জয়ী করাতে হবে এবং শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। আজকে যদি আমাদের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হয়, তাহলে এই বরিশালে দল, মত, নির্বিশেষে সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে খোকন সেরনিয়াবাতের নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে সেই নির্বাচন আমরা করবো। ইনশা-আল্লাহ আপনারা সবাই আমাকে সহযোগীতা করবেন।