 
                                            
                                                                                            
                                        
হাতে কাস্তে, মাথায় মাথাল আর কোমরে গামছা পেঁচিয়ে পড়ন্ত বিকেলে ধান কাটতে কৃষকের মাঠে হাজির হলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক (ডিসি) এসএম মোস্তফা কামাল।
ডিসিকে এমন বেশে দেখে কৃষক ভেবেছিলেন স্থানীয়রা। কিছুক্ষণ পর ভুল ভাঙল তাদের। জানলেন তিনি কৃষক নন, ডিসি মোস্তফা কামাল। শুনে চমকে গেলেন সবাই।
ঠিক এমন বেশেই ধান কাটা ও নবান্ন উৎসবের উদ্বোধন করেছেন ডিসি এসএম মোস্তফা কামাল। শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের যবুরাজপুর গ্রামের কৃষকের মাঠে ধান কেটে নবান্ন উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি।
যবুরাজপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নানের জমির ধান কেটে নবান্ন উৎসব উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় অংশ নেন ডিসি। এ সময় ডিসি মোস্তফা কামাল বলেন, নবান্ন উৎসব কৃষকের প্রাণের উৎসব। আগে ঘরে ঘরে এই উৎসব পালন হতো। সেই দিনে আবার ফিরে যেতে হবে আমাদের। নতুন ধানের পিঠা-পায়েস লোভনীয় খাবার। নবান্নের ধান দিয়ে আমার মা-চাচিরা ঢেঁকি দিয়ে নতুন ধানের চাল মাড়িয়ে আটা তৈরি করতেন। সেই আটা দিয়ে তৈরি করতেন নানা রকমের পিঠা-পায়েস। এর ঘ্রাণ ছড়াতো চারপাশ। শুরু হতো নবান্ন উৎসব। সেই পিঠা উৎসব আগামীতে সাতক্ষীরায় উদযাপন করা হবে।
ডিসি আরও বলেন, ধান কেনায় কোনো প্রকার অনিয়ম হলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে ধান কিনলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কৃষকদের হয়রানি করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। কোনো কৃষক হয়রানির শিকার হলে আমার কাছে অভিযোগ করবেন। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।
জেলা খামারবাড়ির উপপরিচালক অরবিন্দু বিশ্বাসের সভাপতিত্বে নবান্ন উৎসবের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- খামারবাড়ির উপ-সহকারী পরিচালক (শস্য) জসীম উদ্দীন, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম, জেলা কৃষক ক্লাবের সভাপতি ও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক ইয়ারব হোসেন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্বজল মোল্লা, মো. নুরুল আমিন, জুবায়ের হোসেন, হিন্দ্রজিত সাহা, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চিরন্ময় সরকার, স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামসহ এলাকার কৃষক-কৃষাণী।