 
                                            
                                                                                            
                                        
রকিং চেয়ারে বসে দু’মাস বয়সী শিশু রাফায়েলের যত্ন করছেন যুক্তরাজ্যের লেবার দলীয় এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। কিন্তু মাথায় ঘুরছে কাজের কথা। ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ সংসদের নাটকীয় একটি সপ্তাহের প্রতিটি আপডেটের দিকেই নজর তার। সংসদ সদস্যদে নিয়ে গড়া হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপের মাধ্যমে চলছে যোগাযোগ।
সম্প্রতি তিনি ব্রিটিশ স্বরাষ্টমন্ত্রী সাজিদ জাভিদের সঙ্গে বিচার ছাড়া আটকে রাখার বিষয়ে বৈঠক করেছেন। কখনও কাজে কখনও বাড়ি—এমনটা মাতৃত্বকালীন ছুটির অংশ নয়। কিন্তু ব্রিটেনের পরিস্থিতি আসলে ভিন্ন। বাচ্চা নেয়ার পর ছুটি নেয়ার কোন সুযোগ নেই এমপিদের। কারণ তারা আনুষ্ঠানিক ভাবে কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হন না। সুতরাং কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা যে সুযোগ পান সেটি ব্রিটিশ এমপিদের ভাগ্যে জোটে না।
এ প্রসঙ্গে, মেয়ে আজালিয়ার কথা স্মরণ করেন টিউলিপ। মেয়েটির জন্মের মাত্র ৬ সপ্তাহ পরই সংসদে ফিরে যেতে হয়েছিলো তাকে। যে কারণে স্তনের প্রদাহে আক্রান্ত হন তিনি।
তবে হাউজ অব কমন্সে প্রক্সি ভোট দেয়ার পদ্ধতি চালু করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন ৩৬ বছর বয়সী এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ। সিজারিয়ান অপারেশন পিছিয়ে ব্রেক্সিট নিয়ে ভোট দিতে গিয়ে আলোচনায় আসার পর প্রক্সি ভোট চালু হয়। এখন অসুস্থ ব্রিটিশ এমপিরাও অনুপস্থিতিতে ভোট দিতে পারেন। সম্প্রতি পিতৃত্বকালীন ছুটিও নিয়েছেন এক সাংসদ।
সেই কঠিন সিদ্ধান্ত পরিবারের দেয়া সাহসেই নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন টিউলিপ। তিনি বলেন, ‘আমি জনগণের সেবকদের পরিবারে বেড়ে উঠেছি(তার খালা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী)। আমার স্বামী বললো, শরীর তোমার সুতরাং সিদ্ধান্তটিও তোমার। মা বললো, যদি এই সিদ্ধান্ত নিতে তোমার মন সায় দেয়, তবে তাই করো।’
একজন মা হওয়া ও রাজনীতিবিদ হওয়া সহজ নয় বলে জানিয়েছেন টিউলিপ। সব সময় সঠিকভাবে মায়ের দ্বায়িত্ব পালন করতে পারেন না। শিশুদের বেশিরভাগ যত্ন নেয় তার স্বামী ক্রিস।
টিউলিপ বলেন, ‘একদিন আমি বাসায় এলাম। আজালিয়া বললো তার বাবাকে দরকার, মাকে নয়। আসলে বাবার সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর কারণে তার পছন্দ এমন হয়েছে।’
ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষে যেসব এমপি, টিউলিপ তাদের একজন। তাই হত্যার হুমকিও পেয়েছেন। সম্প্রতি নতুন বাড়িতে ওঠে সবার আগে সিসি ক্যামেরাসহ নিরাপত্তা উপকরণের দিকেই মনোযোগ দিতে হয় তাকে।