ঝালকাঠির নলছিটিতে প্যানেল মেয়রের নির্যাতনে স্ত্রী হাসপাতালে

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। আহত রেশমা বেগম (৩৫) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় স্বামী নলছিটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদার ও দেবর সোহাগ তালুকদারের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভিকটিম। বিষয়টি নিশ্চিত করে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, দীর্ঘ ১৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার বর্তমানে এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদারের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের কাইয়ুমপুর এলাকার মো. আলী আশ্রাবের মেয়ে রেশমা বেগমের বিয়ে হয়। বর্তমানে এ দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

স্বজনরা জানান, সন্তানদের রেখে ঈদের আগে মারধর করে রেশমাকে ঘর থেকে বের করে দেন পলাশ। উপায়ান্তু না পেয়ে রেশমা নারায়ণগঞ্জে বাবার বাড়িতে চলে যান। তবে সন্তানদের মায়ায় ঈদের একদিন আগে স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন রেমশা। এরপর রাতে তাকে পরিকল্পিতভাবে বেধড়ক মারপিট করেন পলাশ ও তার ভাই সোহাগ।

শেবাচিমে চিকিৎসাধীন রেশমা অভিযোগ করেন, স্বামী পলাশ তালুকদারের পরকিয়া সম্পর্কের বিষয়টি তিনি জেনে ফেলেন। এরপর স্বামী ও তার ভাই সোহাগ তালুকদার প্রায়ই আমাকে নির্যাতন করতেন।

বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিয়েছি। এতেও তাদের মন ভরেনি। সর্বশেষ ১০ লাখ টাকা যৌতুক চেয়েছে। না দেওয়ায় আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয় তারা। সবশেষে মারধরের সময় প্রতিবেশীরা আমার চিৎকার শুনে প্রাণে রক্ষা করেছে। আমি সন্তানদের ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রেশমার বাবা মো. আলী আশ্রাব বলেন, আমার মেয়েকে তালাক দিয়ে পলাশ দ্বিতীয় বিয়ে করার চেষ্টা করছে। তাই রেশমার ওপর নির্যাতন করে সন্তানদের রেখে দিয়েছে তারা। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদার বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ চলছে। কয়েক বছর আগে আমার স্ত্রীর অত্যাচারে স্ট্রোক করে বাবা মারা গেছেন। আমার মা তাদের বাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকেও অপমান করে বের করে দিয়েছিল রেশমা। এ নিয়েই আমাদের মধ্যে বিরোধ চলছে। আমি কোনো যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন বা মারধর করিনি। প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করে আমার স্ত্রীর সঙ্গে মিলে ক্ষতি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিস) দায়িত্বরত পুলিশের এসআই আব্দুল জলিল বলেন, আমি পলাশ তালুকদারকে ফোন করেছিলাম বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য। কিন্তু পলাশ আমাকে জানিয়েছেন স্ত্রীকে তালাক দেওয়া হয়েছে। এখন আর তিনি তার সঙ্গে সংসার করবেন না।