 
                                            
                                                                                            
                                        
গত ১৫ আগস্ট তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হয়। ওই দিন গোষ্ঠীটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, শত শত কমান্ডো ও যোদ্ধারা কাবুল প্রবেশ করেছিল। তবে ওই দিন তালেবানের এক শীর্ষ ব্যক্তিত্ব কাবুলে প্রবেশ করেননি। তিনি হচ্ছেন গোষ্ঠীটির সর্বোচ্চ নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।
২০১৬ সালে যখন অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বিদেশি সেনাদের হামলায় বিপর্যস্ত তালেবান, তখন গোষ্ঠীটির হাল ধরেছিলেন হায়বাতুল্লাহ। বিভক্ত দলটিকে একসঙ্গে জোড়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি। চার বছরেরও বেশি সময় পর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তালেবানকে ফিরিয়ে এনে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি।
তবে তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের মতোই হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। ইসলামি উৎসবের দিনগুলো উপলক্ষে তার বাণী প্রকাশের মাধ্যমে বছরে কয়েক বার তালেবানের এই শীর্ষনেতার অস্তিত্ব জানা যায়। এ পর্যন্ত তিনি জনসম্মুখে আসেননি এবং তার উপস্থিতিও তালেবানের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ছাড়া অন্যদের কাছে অজানা।
কাবুল দখলের পর হায়বাতুল্লাহর উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তালেবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছিলেন, ‘আল্লার ইচ্ছায় আপনারা শিগগিরই তাকে দেখতে পাবেন।’
পর্দার অন্তরালে শীর্ষনেতাকে রাখার ইতিহাস অবশ্য তালেবানের পুরোনো। নব্বই দশকে তালেবান ক্ষমতায় এলে এর তৎকালীন নেতা মোল্লা ওমর খুব কমই কাবুল সফর করতেন। তিনি কান্দারে নিজের বাড়িতে বাস করতেন। কোনো প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করতেও অনিচ্ছুক ছিলেন ওমর।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এশিয়া প্রকল্পের প্রধান লরেল মিলার জানান, মোল্লা ওমরের মতোই আখুন্দজাদা অন্তরালে থাকার ধাঁচ বেছে নিয়েছেন। নিরাপত্তার কারণেও তার অবস্থান গোপন রাখতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটাও সম্ভব যে দেখা দেওয়ার পর তিনি মোল্লা ওমরের মতো সরে আসবেন এবং দূর থেকে কর্তৃত্ব প্রয়োগ করবেন।’
অবশ্য পাকিস্তানভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বলেছেন, ‘যতদিন বিদেশি সেনারা আফগানিস্তানের মাটিতে রয়েছে ততদিন নিজেরা জিহাদি রাষ্ট্রে আছে বলে মনে করছে তালেবান। তারা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নেতাকে হয়তো গোপনে রাখবে তালেবান।’