কোথাও যানজট, কোথাও সঙ্কট

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি উদযাপনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যোগ দিচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এদিন ব্যাপক যানজটের আশঙ্কায় প্রাইভেট কার বের করেননি অনেকে। তবে যারা বের করেছেন চরম বিপাকে পড়েছেন। একই শঙ্কায় সড়কে নামেনি অধিকাংশ গণপরিবহন। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অনেককেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর অধিকাংশ সড়কেই ব্যাপক যানজট। দুপুর ১টার পর থেকে মগবাজার থেকে কাকরাইলের হেয়ার রোড (প্রধান বিচারপতির বাসভবন সংলগ্ন সড়ক), বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেট থেকে মধ্য বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজে দেখা যায় তীব্র যানজট। সড়কের একপাশ ও ফুটপাতে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের আনন্দ মিছিল করতে দেখা গেছে। মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউ মার্কেট থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত সড়কেও ছিল তীব্র যানজট।

মহাখালী থেকে বনানী কাকলীর দিকে সড়কের দুইপাশেই ছিল যানজট। এ বিষয়ে আফিয়া পিনা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, গাড়ি দিয়ে শ্যাওড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ফার্মগেট যেতে সাধারণত ৩০-৪০ মিনিট লাগে। তবে আজ ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটেও পৌঁছাতে পারিনি।

তবে কাকরাইল থেকে নয়াপল্টন মোড়, বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন সড়ক ছিল প্রায় যানবাহনশূন্য। অনেকে প্রাইভেট কার নিয়ে খুব অল্প সময়ে এসব সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পাশাপাশি এসব সড়কে চলাচলরত বাসগুলো দরজা আটকে দেয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন অনেক যাত্রী।

দুপুরে শাহবাগ মোড়, কারওয়ান বাজার, কাকরাইল মোড় এলাকায় অনেক যাত্রীকে বাসের অপেক্ষারত দেখা গেছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে অনেককেই।

কর্মদিবসে কেন রাজধানীতে গণপরিবহন সঙ্কট। কেন বন্ধ রাখা হয়েছে অধিকাংশ রুটের বাস? জানতে চাইলে ঢাকা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের কারণে কয়েকটি সড়ক বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সেসব রুটে বাস চলছে না। অন্যান্য রুটের বাস বন্ধের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’

বেলা ৩টার পর থেকে বাংলা একাডেমি ও সংলগ্ন এলাকা, শিল্পকলা একাডেমি ও মৎস্য ভবন সংলগ্ন এলাকা, শিশু একাডমি ও দোয়েল চত্বর এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠ ও সংলগ্ন এলাকা, নগর ভবন, বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর এলাকা, রমনা পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ, শিল্প ভবন চত্বর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে দলে দলে সবাই আসছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের দিকে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, র‌্যালিতে সমবেত হওয়া এবং নয়টি স্থান হতে র‌্যালি যোগে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার কারণে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং চারদিকের রাস্তাসমূহে সাধারণ যানবাহন চলাচলে সমস্যা হবে। যানজট এড়িয়ে নির্বিঘ্নে র‌্যালি গমনের উদ্দেশ্যে উক্ত সময় শাহবাগ, কাকরাইল মসজিদ, নাইটিংগেল, ফকিরাপুল, শাপলা চত্বর, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখারপুল, বকশিবাজার, পলাশী, নীলক্ষেত অঞ্চল দিয়ে র‌্যালি এলাকায় গাড়ি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাইভারশন দেয়া হবে।

সর্বসাধারণকে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে র‌্যালি এলাকা এড়িয়ে চলার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। একই সঙ্গে নিরাপত্তার স্বার্থে র‌্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা ব্যাক প্যাক, হ্যান্ডব্যাগ, ভ্যানেটিব্যাগ, সিগারেট লাইটার বহন পরিহারের জন্য অনুরোধ করা হলো।

সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে লেজার শো. ফায়ারওয়ার্কসহ দুই থেকে তিন ঘণ্টার একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হবে এ অনুষ্ঠান।