ওষুধ নেই, এক বছর মশক নিধন বন্ধ বরিশাল সিটি করপোরেশনে

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)

বরিশাল সিটি করপোরেশনে (বিসিসি) ওষুধ না থাকায় গত এক বছর ধরে মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমনকি ২০১৭-১৮ বছরে ওষুধ কেনার জন্য দরপত্রও আহ্বান করা হয়নি। ফলে মশার উৎপাতে নগরজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও পরিত্রাণে বিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ কোনো উদ্যোগ নিতে পারছে না। এমন অবস্থায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের এলাকায় ছয় মাসের মধ্যে বিসিসির কর্মীদের মশক নিধনের ওষুধ ছিটাতে দেখেননি কেউ। গত শীত মৌসুম থেকেই নগরীতে মশার উৎপাত অসহনীয় হয়ে উঠেছে।

নগরীর কাউনিয়ার বাসিন্দা ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, নগরীতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম নিয়মিত না হওয়ায় অলিগলি, ড্রেনে মশা ছড়িয়ে পড়েছে। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ তারা। তিনি একাধিকবার সিটি করপোরেশনে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। নগরীর নিউ সার্কুলার রোডের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক সাদিয়া আফরিন বলেন, মশার অসহনীয় উৎপাতে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শফিকুর রহমান বলেন, মশা নিধনে নগরীতে কোনো কার্যক্রম নেই। মশার উৎপাতে দিনের বেলায়ও কলেজে থাকা যায় না। শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারে না। নগর ভবনে একাধিকবার তাগাদা দিয়েও কোনো ফল হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা বলেন, তারা দুই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেন। এর মধ্যে লার্ভি ডিসাইড মশা ধ্বংস করে, আর অ্যাডাট ডিসাইট মশার ডিম নষ্ট করে। এক বছর ধরে এ দুটির কোনো ওষুধই নেই।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, মশা নিধনের জন্য একটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন পাঁচ লিটার ওষুধ প্রয়োজন। সে অনুযায়ী নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে দৈনিক ১৫০ লিটার ওষুধ ছিটাতে হয়।

বিসিসির পরিচ্ছন্নতা শাখার পরিদর্শক ইউসুফ হোসেন বলেন, ওষুধের অভাবে বেশ কয়েক মাস মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ আছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ওষুধ কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান হয়নি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ঠিকাদাররা সময়মতো বিল না পাওয়ায় গত অর্থবছরে দরপত্রে কেউ অংশ নেননি।

এ ব্যাপারে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, কর্মচারীদের আন্দোলনে গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে নগর ভবন এক মাসেরও বেশি সময় অচল ছিল। এ কারণে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। অল্প পরিমাণ ওষুধ তাদের হাতে রয়েছে। আরও ওষুধ যোগ করে খুব শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করা হবে।