ওমরাহ পালনে সুখবর না থাকলেও আছে আশ্বাস!

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় সৌদি আরব সফর করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল আজ সকালে দেশে ফিরেছে। সফরে ওমরাহ পালনের ব্যাপারে বাংলাদেশি মুসল্লিদের টিকার বুস্টার ডোজ সংক্রান্ত জটিলতার এখনও কোনো সমাধান হয়নি। তবে সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সঙ্গে আলাপকালে ধর্মসচিব মো. নুরুল ইসলাম পিএইচডি বলেন, সফরকালে তারা ১৪ সেপ্টেম্বর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের নেতৃত্বে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টারের (বর্তমানে মন্ত্রীর দায়িত্বে) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওমরাহ যাত্রীদের (সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক) টিকার বুস্টার ডোজ সংক্রান্ত সমস্যাটি তুলে ধরলে তিনি জানান, বিষয়টি তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। এরপরও তারা সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানাবেন।

ধর্মসচিব বুস্টার ডোজ সংক্রান্ত সমস্যাটি শিগগির সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি সমস্যাটি লিখিত আকারে তুলে ধরে তাদের চিঠি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

আগামী দু-একদিনের মধ্যে তারা সমস্যাটি নিয়ে সৌদি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবেন জানিয়ে ধর্মসচিব বলেন, বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে চীনের সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই টিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফলে সৌদি সরকারও সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে টিকাদান সংক্রান্ত এ জটিলতার সমাধান করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আলাপকালে তিনি আরও জানান, সৌদি আরবে বর্তমানে প্রতিদিন এক লাখ ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মক্কায় ওমরাহ করছেন। মদিনায়ও সার্বক্ষণিক নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরাও ওমরাহ করছেন বলে জানান তিনি।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল সৌদি আরবে যায়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় এক বছরেরও বেশি সময় বন্ধ রাখার পর সম্প্রতি সৌদি সরকার বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ওমরাহ পালনের অনুমতি দিয়েছে। বিভিন্ন দেশের মুসল্লিরা ওমরাহ করতে সৌদি যেতে পারলেও করোনার টিকা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বাংলাদেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যেতে পারছেন না।

সৌদি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে করোনা টিকার (ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা জনসন অ্যান্ড জনসন) সম্পূর্ণ ডোজ টিকা নিতে হবে। এসব টিকার দুই ডোজ গ্রহণ করা ছাড়া সৌদিতে প্রবেশ করা যাবে না। এছাড়া কেউ যদি চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকার দুই ডোজ নিয়ে থাকেন, তাহলে তাদের ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার বাড়তি বুস্টার ডোজ নিতে হবে।

চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

দেশে আজ পর্যন্ত পৌনে চার কোটিরও বেশি মানুষ টিকা নিয়েছে। বর্তমানে দেশে ভারতের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না, ফাইজার ও চীনের সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ সিনোফার্মের টিকা নিয়েছেন। ফলে সৌদিতে ওমরাহ করতে চাচ্ছেন এমন অনেকেই সিনোফার্মের দুই ডোজ নেওয়ার পরও দেশে টিকার বুস্টার ডোজ প্রয়োগের সুযোগ না থাকায় সেখানে যেতে পারছেন না।