ওবায়দুল কাদেরকে স্যার বলা ঠিক হয়নি: সিইসি

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, শুধু নির্বাচন ব্যবস্থা নয়, রাজনীতিসহ অনেক কিছু পচে গেছে। আমাকে অস্ট্রেলিয়া বা বিলেতের নির্বাচন কমিশনার করে দেন কত সহজেই ভোট করে দেবো। এখানে নির্বাচন করা কঠিন কাজ। রাজনীতিতে অর্থশক্তি আছে— সেটাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো।

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপে দলটির নেতা সাইফুল হকের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এভাবেই নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন সিইসি।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে স্যার বলা ঠিক হয়নি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোথাও নিজের ছবি দেখলেই মনে হয় বাপ-দাদাসহ গালিগালাজ শুরু হবে।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ১৮ জুন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ইসির সংলাপে অংশ নেয়। সংলাপের সময় ওবায়দুল কাদেরকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করেন সিইসি। এটা নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিশনারও কিন্তু কোনো মন্ত্রীকে রিসিভ করেন না। যেহেতু উনার (ওবায়দুল কাদের) সঙ্গে আমার আগেই পরিচয় ছিল। পূর্বপরিচিত থাকায় উনাকে আমি স্যার সম্বোধন করেছিলাম। এটার জন্যও আমাকে সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে। যেহেতু এর আগে সবসময় স্যার বলেছি, তারই ধারাবাহিকতায় বলেছিলাম। তবে, দেখলাম এটাও বলা যাবে না।’

সিইসি বলেন, ‘আমার আজকে যে অবস্থা এ অবস্থায় যদি বিদায় হতে পারতাম ভালো লাগতো। কালকে পেপারে সব জিনিসগুলোকে লেখা হবে। আমি মাইন্ড করি না। আমি মিডিয়ার স্বাধীনতা বিশ্বাস করি। রোববার (১৭ জুলাই) ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন দল জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। সেখানে হাসিরছলে অস্ত্রের কথা বললেন ববি হাজ্জাজ। তখন আমি বললাম কেউ অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ালে আপনারাও তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা কী কখনো মিন করা হয়? একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এতটুকু জ্ঞান নেই? এখন এসব কথা কী অন্তর থেকে বলা হয়েছে নাকি কৌতুক করে বলা হয়েছে, এগুলো বুঝতে হবে। আজ পেপারে দেখা গেলো এটা প্রধান খবর। একটা লোককে নামিয়ে দেওয়া, এরপর তো আর মনোবল থাকে না কাজ করার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমার ইউটিউব বন্ধ করে দিয়েছি। যখনই আমার ছবি দেখি, বুঝতে পারি যে বাপ-দাদাসহ গালিগালাজ শুরু হবে। তখন আর দেখি না। প্রতিনিয়তই এমনভাবে বলা হচ্ছে যে, কোমড় ভেঙে গেছে। আমরা কিন্তু মিডিয়াকে সাপোর্ট দিই, মিডিয়াকে বিশ্বাস করি। কুমিল্লা সিটি নির্বাচন মিডিয়ায় খবর ছাপা হলো আমরা নাকি এমপি বাহারকে বের করতে পারিনি। আমরা তখন বললাম আমরা বাহার সাহেবকে বিনীতভাবে অনুরোধ করেছি। এটা কোনো বেআইনি অনুরোধ হয়নি। উনি আমাদের অনুরোধ রক্ষা করতেও পারেন আবার নাও পারেন। কিন্তু উনাকে জোড় করে এলাকা থেকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার আমাদের আইনে নেই।’