সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি এখনও অক্সিজেন সাপোর্টে (কৃত্রিম শ্বাস) আছেন। বিষয়টি রোববার রাত সাড়ে ১০টায় নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। এখনও তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে।
রোববার রাত ৯টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন এইচ এম এরশাদকে দেখতে যান জাতীয় পার্টি- জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, এমপি। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে এরশাদের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন। চিকিৎসকরা তাকে জানান, সকালের চেয়ে এখন একটু ভালো আছেন এরশাদ।
রোববার বিকেলে এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী জাগো নিউজকে বলেন, শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে এরশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থার ৫০ শতাংশ উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু রোববার সকাল থেকে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ফুসফুসে পানিসহ ইনফেকশন দেখা দেয়। পরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়।
রোববার জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জি এম কাদের এসব তথ্য জানান। সেসময় তিনি আরও জানান, ওষুধ পরিবর্তন করে তার ইনফেকশন বন্ধের চিকিৎসা চলছে।
‘সকালের পর অবস্থার অবনতি হয়নি। এমন চলতে থাকলে এরশাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে চিকিৎসকরা ধারণা করছেন।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিরোধীদলীয় নেতাকে সিএমএইচে দেখতে যান জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাদের ছেলে রাহ্গীর আল মাহে এরশাদ ওরফে সাদ এরশাদ।
এরশাদকে দেখার পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রওশন এরশাদ চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘শারীরিক অবস্থার উন্নতির এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
অসুস্থ বোধ করায় গত ২৬ জুন সিএমএইচ ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয় এরশাদকে। পরের দিন (বৃহস্পতিবার) জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, শারীরিক অবস্থা বিবেচনা-সাপেক্ষে তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হতে পারে।
ওইদিনই (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা আরও বলেন, ‘এরশাদের চিকিৎসার জন্য টাকার সংস্থান হয়নি। আজকে উনি (এরশাদ) মৃত্যুশয্যায় কিন্তু উনার চিকিৎসার জন্য যে টাকার প্রয়োজন তার সংস্থান এখন পর্যন্ত আমরা করতে পারিনি। আমরা উনাকে যে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে… সেই অবস্থাও উনার নেই।’
সর্বশেষ গত ২০ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য যান এরশাদ। সেখান থেকে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সে দেশে যান এরশাদ। ভোটের মাত্র তিনদিন আগে ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন তিনি।