উপসচিবদের গাড়ি সুবিধা কমলো। প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে তিন বছর পর গাড়ি সুবিধা পাবেন সরকারের উপসচিবরা। আগে কর্মকর্তারা উপসচিব পদে পদোন্নতির পরই গাড়ি কিনতে সুদমুক্ত ঋণ পেলেও এখন তা পাওয়া যাবে এই পদে তিন বছর কাজ করার পর।
এমন নিয়ম রেখে ‘প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত ঋণ এবং গাড়ি সেবা নগদায়ন নীতিমালা ২০২০ (সংশোধিত)’ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বুধবার (১৯ আগস্ট) সংশোধিত নীতিমালা জারি করা হয়, একই সঙ্গে এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, গাড়ি সুবিধার প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলতে বোঝাবে- সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সুপারিশক্রমে সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে কমপক্ষে তিন বছর অতিক্রম করেছেন এমন কর্মকর্তা, সরকারের যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব/সিনিয়র সচিব।
আগে প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলতে বোঝাত সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব/সিনিয়র সচিব।
সংশোধিত নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, অধুনালুপ্ত বিসিএস (ইকোনমিক) ক্যাডারের যুগ্ম-প্রধান বা এর উপরের কর্মকর্তা, সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) থেকে উপরের পর্যায়ের কর্মকর্তা যারা সরকারি যানবাহন অধিদফতর থেকে সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য গাড়ি সুবিধাপ্রাপ্ত।
এছাড়া উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব/সিনিয়র সচিব পদে চুক্তিতে বা রাষ্ট্রপতির ১০ শতাংশ কোটায় নিয়োজিত কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত হবেন না। তবে রাষ্ট্রপতির ১০ শতাংশ কোটায় নিয়োজিত কর্মকর্তা ইতোপূর্বে সার্বক্ষণিক সরকারি গাড়ি ব্যবহারের প্রাধিকারপ্রাপ্ত হলে এ শর্ত প্রযোজ্য হবে না বলে সংশোধিত নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের উপসচিবরা ব্যক্তিগত গাড়ি কেনা, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস ও ট্যাক্সের জন্য এককালীন ৩০ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ পান। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তারা প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা গাড়িভাতা পান। আগে যুগ্মসচিবরা প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে গাড়ি কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এ ঋণ পেতেন। কিন্তু ২০১৭ সালের জুন থেকে উপসচিবদেরও প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সরকার। এরপর থেকে তারাও গাড়ি কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণের এ সুবিধা পাচ্ছিলেন।
করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে ব্যয় কমাতে সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, গাড়িভাড়া, লিজ বা অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর করলে তা ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী অসদাচরণ বলে গণ্য হবে।
গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিদেশে অধ্যয়নরত বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বিদেশে বাংলাদেশ সরকারের কোনো মিশন/সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় রক্ষণাবেক্ষণের ৫০ শতাংশ প্রাপ্য হবেন বলে সংশোধিত নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।