আশা করা যাচ্ছে, এবারের ঈদযাত্রা গতবারের চেয়ে আরও স্বস্তিদায়ক হবে। এ নিয়ে কোন ধরণের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে সড়ক সম্পর্কে কোনরূপ আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে জনস্বার্থে সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সোমবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এই অনুরোধ জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
দৈনিক সমকালের পাঠকদের জন্য ওবায়দুল কাদেরের সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী রেলওয়ে ওভারপাসের দু’লেইন ইতোমধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। সেখানে এখন আর যানজট হচ্ছে না। ১৫ জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হবে। তখন সম্পূর্ণ যানজটমুক্ত হবে ফেনী রেলওয়ে ওভারপাস এলাকা।
ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ময়নামতি-সরাইল সড়কের নির্মাণকাজ শুরু প্রক্রিয়াধীন। আপাতত এ সড়কের মেরামত ও সংস্কার কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মেঘনা ও গোমতি সেতুর টোলপ্লাজায় টোল আদায় ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা হয়েছে।
আগামী ডিসেম্বর নাগাদ ২য় কাঁচপুর, ২য় মেঘনা ও ২য় গোমতী সেতুর নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের ছ’মাস আগে শেষ হতে যাচ্ছে। এছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ কাজ প্রক্রিয়াধীন।
সাসেক প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর-এলেঙ্গা মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। এরইমধ্যে এ মহাসড়কে ২৬টি সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। যানজটপ্রবণ চন্দ্রা মোড় প্রশস্ত করার পাশাপাশি বাইলেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সাসেক প্রকল্পের আওতায় ১১টি উড়ালসেতু ও রেল ওভারপাস এবং ১০টি আন্ডারপাস নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। এয়ারপোর্ট-জয়দেবপুর বাস র্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটি প্রকল্পের সড়ক অংশের কাজ ঈদকে সামনে রেখে জনদুর্ভোগ লাঘবে আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঢাকার চারপাশের যানজটপ্রবণ এন্ট্রি এবং এক্সিট পয়েন্টগুলোর ব্যবস্থাপনায় নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। গাজীপুর-মদনপুর দেশের প্রথম পিপিপিভিত্তিক এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ আগামী অক্টোবরে শুরু হবে।
পোস্তগোলা-ভাঙ্গা দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের প্রকল্প মেট্রোরেল-৬ এর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। মেট্রোরেলের আরও ৪টি রুটের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজের প্রথম ধাপের কাজ ৩০ ভাগ শেষ হয়েছে।
বর্ষায় অতিবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা সড়কের মেরামত কাজ আগামী ৮ই জুনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পদ্মাসেতুর চারটি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ ৫৫ ভাগ শেষ হয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ৮০ কি.মি দীর্ঘ দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামবাসীর স্বপ্নের প্রকল্প কর্ণফূলি টানেলের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। আমানত শাহ সেতুর দুপ্রান্তের সড়ক ছয়লেনে উন্নীতকরণ কাজ এগিয়ে চলেছে।
বাগেরহাট-চিতলমারি-পাটগাতি সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ এবং যশোর-মাগুরা সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। আগস্ট মাসে কালনাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। টেকেরহাট -বাকেরগঞ্জ সড়কের দেড় কিলোমিটারের কাজ চলমান রয়েছে, এছাড়া সড়কের বাকি অংশ সচল রয়েছে।
এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে মন্ত্রণালয় সজাগ রয়েছে। বৃষ্টিজনিত ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতে দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। অতিবৃষ্টিতে যান চলাচলে ধীরগতি হলেও যানজট হবে না। আমাদের প্রচেষ্টা অবিরত, অব্যাহত।
আশা করা যাচ্ছে, এবারের ঈদযাত্রা গতবারের চেয়ে আরও স্বস্তিদায়ক হবে। এ নিয়ে কোনধরণের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে সড়ক সম্পর্কে কোনরুপ আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে জনস্বার্থে সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
(পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের আপডেট জানানো হবে)’’