‘হে আল্লাহ, আমাদের দোয়া কবুল করে নেন। হে পরওয়ারদিগার, আমাদের ইমান রক্ষা করেন, আমাদের ভালো কাজগুলো মঞ্জুর করে নিবেন। হে রাহমানির রাহিম, সব বিপদ দূর করে দেন, সারা দুনিয়ার মানুষের ওপর রহমত বর্ষণ করেন। বিনম্র সুরে ইহকাল ও পরকালের মালিক মহান আল্লাহ পাকের কাছে দুই হাত তুলে এই মোনাজাত করছিলেন ঢাকা কাকরাইল মসজিদের মেহমান মাওলানা হযরত ফারুক। আর তার মোনাজাতের মধ্যে কিছুক্ষণ পর পর ‘আমিন’ ‘আমিন’ ধ্বনি উঠছিল। বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে মাইকে সেই ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ছিল চারপাশের এলাকায়।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার সরুগ্রাম স্কুল মাঠের সামনে বিশ্ব ইজতেমার মূল মঞ্চ থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা ৫৮ মিনিটে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত। ১০ মিনিট স্থায়ী এই মোনাজাত করেন। আরবি ও উর্দু ভাষায় তার সুমধুর সুরের মোনাজাত শুরু হতেই হাজার হাজার মুসুল্লির কলরব মুহূর্তে থেমে যায়। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নেমে আসে নীরবতা। তার সঙ্গে হাজার হাজার মুসুল্লি দুই হাত তুলে ‘আমিন’, ‘আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনি তোলেন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়।
মোনাজাতে অংশ নিতে শুক্রবার ভোররাত থেকে ইজতেমা ময়দানে পৌঁছেন অনেক মুসুল্লি। ফজরের নামাজের পর থেকেই ইজতেমার বিশাল ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে মুসুল্লিরা ময়দানের আশপাশের রাস্তা, অলিগলিতে অবস্থান নেন। তিন দিনের বয়ান শুনতে মুসুল্লিদের বেশির ভাগ প্রথম দিনই ইজতেমার সমবেত হন। যারা নিয়মিত বয়ান শুনতে পারেননি, তাদের মধ্যে অনেকেই নিয়ত করেছিলেন আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে। নানা বয়সী ও পেশার মানুষ, এমনকি নারীরাও মোনাজাতে অংশ নিতে সকালেই ইজতেমা এলাকায় হাজির হন।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবির বলেন, বুধবার আসরের নামাজ আদায়ের পর ঢাকা কাকরাইল মসজিদের মেহমান মাওলানা আব্দুল মালেকের উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী ৪০তম বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও ঢাকার কাকরাইল মসজিদের মেহমানদের তত্বাবধায়নে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা পরিচালিত হয়। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে।