১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ কালরাতে গণহত্যার পর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন নিরস্ত্র বাঙালি। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর এক মাস পর ২৫ এপ্রিল জল-স্থল ও আকাশ পথে বরিশালে হামলা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারা সার্কিট হাউস, বিএম স্কুল, নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়িসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে থাকে। ২ মে তারা স্থায়ী ঘাঁটি স্থাপন করে নগরীর বান্দ রোডের পানি উন্নয়ন বোর্ড (ওয়াপদা) অফিস এবং কীর্তনখোলা তীরবর্তী খাদ্য বিভাগের সিএসডি (ত্রিশ গোডাউন) গোডাউন কম্পাউন্ডে। সেখানেই তারা চালাতে থাকে পৈশাচিকতা। সামরিক ট্রাকে করে তারা ঘাঁটিতে ধরে আনত মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ এবং নারীদের। তারপর তাদের ওপর চালাত ইতিহাসের বর্বরতম নিষ্ঠুরতা।
প্রত্যক্ষদর্শী তত্কালীন খাদ্য বিভাগের কর্মচারী আবদুল হাকিম আলী সরদার জানিয়েছেন, দাফতরিক কাজে প্রতিদিন হানাদারদের ক্যাম্পে গিয়ে দেখেছেন, ওই ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী সাধারণ মানুষকে দলে দলে ধরে এনে নির্মম নির্যাতন চালানো হতো। হানাদাররা বেয়নেট দিয়ে কুপিয়ে এবং রাইফেল থেকে গুলি চালিয়ে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে লাশ ফেলে দিত গোডাউন লাগোয়া খালে। আবার নদীর তীরে নিয়েও হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিত। শুধু তাই নয়, নারীদের ধরে এনে চালানো হতো যৌন নির্যাতন।