অবসর সময় মানে মুক্ত সময়। সাধারনত, যখন আপনি কাজ করছেন না। ঠিক বসে আছেন অথবা সোস্যাল মিডিয়াতে বন্ধুদের সাথে গল্প করছেন। আপনার সবচেয়ে খারাপ লাগার সময় হতে পারে অবসর সময়। কিন্তু একে ভালো লাগার জন্য ব্যবহার করুন। অবসর হয়ে থাকবেন না। অবসর সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করুন। অবসর সময় অনেকটা কষ্টদায়কও বটে। ছোট থেকেই শুনে এসেছি ‘অবসর মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।’
যে সময়গুলো আমাদের উচিৎ ভালো কিছুর কাজে লাগানো। সামাজিক মাধ্যমের সাথে আমরা এতটাই জড়ানো যে, আমাদের মন/আত্মার শান্তির কথা চিন্তাই করিনা। পড়ালেখার পাশাপাশি আবসর সময় নিজেকে সুখী করতে আসলে আমরা কি করতে পারি? একটানা চাকুরি বা কাজ করতে করতে আমরা প্রতিনিয়তই ক্লান্ত। আমরা কি পারিনা অবসর সময়ে আত্মাকে একটু শান্তি দিতে?
হেনরি ডেভিড থোরো’র একটি জনপ্রিয় উক্তি আছে যাতে তিনি অবসর সময়কে আত্মার শান্তির জন্য ব্যবহার করার প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন। “তিনি সত্যিকারের অবসর গ্রহণ করেন যিনি তার আত্মার সম্পত্তি উন্নত করার জন্য সময় দিয়েছেন।”
অবসর সময় কিভাবে পূরণ করা যায়? আপনার সখ, ইচ্ছার কথা চিন্তা করতে পারেন যা আপনাকে আনন্দ দিবে। আত্মার শান্তির জন্য অবসর সময় হতে পারে একটি উপযুক্ত সময়।
১| আসুন ছোট ছোট গাছ লাগানোর চিন্তা করি। আপনার ঘর ছোট সমস্যা নাই, ঘরের কোনায় ছোট্ট গাছ লাগাতে পারেন। তার পরিচর্চা করুন অবসর সময়ে। সাকুলেন্ট জাতীয় (সরস বা রসালো জাতীয়) গাছ রাখতে পারেন। সাকুলেন্ট জাতীয় গাছ হলো সেসব গাছ যেগুলো কাণ্ড শাখা-প্রশাখা পাতা বা মূলে পানি জমিয়ে রাখে। আপনার মনকে সেগুলো সত্যিই রিফ্রেশ করতে পারে।
২| কবিতা, ছড়া, গল্প লিখুন। আপনার অবসর সময় বেশ আনন্দেই কেটে যাবে।
৩| ছবি আকঁতে পারেন। সুন্দর ছবি আর্ট করুন। কে কি ভাবে সেগুলো বাদ দিন। আপনার নিজ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ছবি আঁকা একটি অন্যতম উপায়। সত্যিই আপনাকে অনেক আনন্দ দিবে অবসর সময়ে।
৪| মেডিটেশন বা যোগ চর্চা করতে পারেন। যা আপনাকে /আত্মাকে পরিপূর্ন আনন্দময় সুখী করবে। মেডিটেশন এমন একটি অভ্যাস যেখানে একজন ব্যক্তি পদ্ধতিটি পরিচালনা করেন বা মনযোগ দেন বা চেতনা মোড করেন। আপনার মন, মানুষিকতা সুস্থ রাখবে। একটি সুন্দর জীবন যাপনে যোগ (মেডিটেশন) করার গুরুত্ব অনেক। “বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন যে বয়ঃসন্ধিটি অপ্রচলিত এবং আমরা জানি যে এমনকি মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে এমন প্রক্রিয়া রয়েছে যা পুরানো বিপর্যয়, খাদ্য সংশোধন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাধ্যমে, দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে ব্যায়ামের মাধ্যমে, যোগব্যায়ামের মাধ্যমে এবং শ্বাস কৌশল, এবং ধ্যানের মাধ্যমে।” দীপক চোপড়া
৫| আপনি সুন্দর একটি পরিবেশে হাটতে পারেন। সবুজ গাছে ভরা একটি প্রকৃতিতে হেটে হেটে আপনার অবসর সময়টুকু কাজে লাগাতে পারেন। প্রকৃতির মুক্ত বাতাস আপনার আত্মাকে পরিপূর্ন করতে পারে।
৬| বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করতে পারেন। ক্রিকেট, ফুটবল খেলতে পারেন বন্ধুদের সাথে নিয়ে।
৭| লিস্ট করুন কি বা কোন বিষয়ে শেখা যায়। সেসব বিষয়ের বই সংগ্রহ করে শিখুন। যেমন, গল্পের বই, বিজ্ঞানের বই অথবা আপনার পরিচিত ভালো লাগা কোন লেখকের। আপনার অবসর বা একাকীত্ব সময়কে কাজে লাগান বই পড়ে।
৮| স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারেন। যেমন, কোন প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ফ্রিতে বাচ্চাদের শিক্ষা প্রদান করতে পারেন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তুলে ধরে মানবতার কাজ করতে পারেন। হয়ত এতে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং একাকীত্ব সময়ের সঠিক ব্যবহার হবে।
আপনি হয়ত আপনার অধিকাংশ সময় ব্যায় করেন একটি মোবাইলে সামাজিক মাধ্যমে সময় কাটিয়ে দিয়ে। কখনোকি মনে করেছেন যে আত্মার শান্তির জন্য অবসর সময়টুকুই বেশি মুল্যবান হতে পারে!